আখেরাতের সহযোগী

আখেরাতের সহযোগী

বিবাহের মাধ্যমে দুটি জীবন একসাথে পথচলা শুরু করে। তাই সবক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগী, উভয়ে উভয়ের কল্যাণকামী। আর দুনিয়ার কল্যাণ ও আখেরাতের কল্যাণ- এ দুয়ে মিলেই মুমিনের কল্যাণ। কারণ, মুমিন দুআ করে-

رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَةً وَّ فِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّار.

হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দাও এবং আখেরাতে কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা কর। -সূরা বাকারা (২) : ২০১

তাই মুমিন দম্পতি দুনিয়ার ক্ষেত্রে যেমন একে অপরের সহযোগী ও কল্যাণকামী তেমনি আখেরাতের ক্ষেত্রেও। এটাই মুমিন দম্পতির জীবনের স্বাভাবিক ধারা।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রিয় সাহাবী হযরত মুআয রা.-কে বলেন-

يَا مُعَاذُ قَلْبًا شَاكِرًا، وَلِسَانًا ذَاكِرًا، وَزَوْجَةً صَالِحَةً تُعِينُكَ عَلَى أَمْرِ دُنْيَاكَ وَدِينِكَ خَيْرُ مَا اكْتَسَبَهُ النّاسُ.

হে মুআয, মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন হল, শোকরকারী অন্তর, যিকিরকারী জিহ্বা, সালিহা (দ্বীনদার) স্ত্রী, যে তাকে দুনিয়া ও দ্বীনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে। -আলমুজামুল কাবীর, তবারানী, হাদীস ৭৮২৮; মাযমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ৭৪৩৮

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

مَنِ اسْتَيْقَظَ مِنَ اللّيْلِ وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ، فَصَلّيَا رَكْعَتَيْنِ جَمِيعًا، كُتِبَا مِنَ الذّاكِرِينَ اللهَ كَثِيرًا، وَالذّاكِرَاتِ.

যখন কোনো পুরুষ রাতে জাগ্রত হয় অতপর তার স্ত্রীকেও জাগ্রত করে, অতপর উভয়ে দুই রাকাত নামায আদায় করে, তাদেরকে ‘যাকিরীন’ ও ‘যাকিরাত’-এর তালিকাভুক্ত করা হয়। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৪৫১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৩৩৫

হযরত উসমান ইবনু আবিল আস রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে-

كَانَ لِدَاوُدَ نَبِيِّ اللهِ عَلَيْهِ السّلَامُ مِنَ اللّيْلِ سَاعَةٌ يُوقِظُ فِيهَا أَهْلَهُ، فَيَقُولُ: يَا آلَ دَاوُدَ قُومُوا فَصَلّوا، فَإِنّ هَذِهِ سَاعَةٌ يَسْتَجِيبُ اللهُ فِيهَا الدّعَاءَ.

হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম রাতের এক সময়ে জাগ্রত হয়ে পরিবারের সকলকে জাগিয়ে দিতেন এবং বলতেন, হে দাউদ- পরিবার! ওঠ এবং নামায পড়। কেননা এটা এমন এক সময় যখন আল্লাহ তাআলা দুআ কবুল করেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬২৮১; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ৪৪৭১

আশা করি, উল্লেখিত আয়াত-হাদীসসমূহে বিবাহের মাকসাদ কী, তাতে কী কী বিষয় লক্ষণীয় এবং দাম্পত্য জীবনে কী কী করণীয়- এর কিছু দিক আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে এসেছে। এখন দেখার বিষয় হল, আমরা এসব বিষয়ের প্রতি কতটুকু লক্ষ রাখছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *