এরচেয়ে বড় সৌভাগ্য আর কী হতে পারে!

কোনো মুমিনকে যদি প্রশ্ন করা হয়, তোমার কাছে এই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ কে? নির্দ্বিধায় তার উত্তর হবে- প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
মুমিনের কাছে যদি জানতে চাওয়া হয়, জান্নাতে তোমার সবচেয়ে বড় চাওয়া কী? সকল মুমিনের একই জবাব হবে- নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গলাভ।
মুমিন-হৃদয়ের তামান্না- জীবনে-মরণে প্রিয় নবীর সান্নিধ্য। জীবনভর প্রিয় নবীর আদর্শে উজ্জীবিত হবে এবং মৃত্যুর পর জান্নাতে তাঁর সান্নিধ্য লাভ করবে- ঈমানদারের জন্য এর চেয়ে বড় কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। সাহাবায়ে কেরামের জীবন থেকে আমরা এ শিক্ষাই পাই। রবীআ ইবনে কা‘ব আসলামী রা. ঐসব খোশনসীব সাহাবীদের একজন, যারা ছিলেন ‘আসহাবে সুফফা’র অন্তভুর্ক্ত। দ্বীন শেখার জন্য সারা দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে পড়ে থাকতেন নবীজীর দুয়ারে। একবার তার জন্য উন্মোচিত হয়ে গেল সৌভাগ্যের আলোক-দিগন্ত। সেই বিবরণ দিয়েছেন রবীআ রা. নিজেই। তিনি বলেন-
আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে রাত্রি যাপন করতাম। তাঁর জন্য অযুর পানি এনে দিতাম এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য খেদমত আঞ্জাম দিতাম। এক রাতে তাঁর ওযুর পানি এনে দিলাম। হঠাৎ আমার কানে প্রবেশ করল এক মধুর আওয়ায; নবীজী বললেন-
سَلْنِي.
তোমার কী চাওয়ার আছে, আমার কাছে চাও রবীআ!
তখন সবিনয়ে আমি আরয করলাম-
أَسْأَلُكَ مُرَافَقَتَكَ فِي الْجَنّةِ.
আল্লাহর রাসূল! আপনার কাছে আমার চাওয়া হল, জান্নাতে আপনার সান্নিধ্য।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
أَو غَيْرَ ذلِكَ.
এটা, না অন্য কিছু চাও?
আমি বললাম-
هُوَ ذاكَ
(আল্লাহর রাসূল!) এটা ছাড়া আমার আর কোনো চাওয়া নেই।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সালাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
فَأَعِنِّي عَلَى نَفْسِكَ بِكَثْرَةِ السّجُودِ.
তাহলে অধিক পরিমাণে সিজদা করার মাধ্যমে এ বিষয়ে তুমি আমাকে সাহায্য করো। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৮৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৩২০
জান্নাতে নবীজীর সঙ্গলাভ! পরকালে প্রিয়নবীর সান্নিধ্য! এরচেয়ে বড় সৌভাগ্য আর কী হতে পারে! এর চেয়ে বড় খোশকিসমত আর কী থাকতে পারে? চাইতে হলে এভাবেই চাইতে হয়। এটাই মুমিন-হৃদয়ের অব্যক্ত বাসনা। এটাই মুমিনের পরম ও চূড়ান্ত প্রত্যাশা। মুমিনের হৃদয়-রাজ্য দখল করে আছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রেম-ভালবাসা এবং জান্নাতে তাঁর সঙ্গলাভের পবিত্র তামান্না।
Leave a Reply