সম্পর্ক রক্ষাকারী সৌজন্য সাক্ষাতেও প্রয়োজন সচেতনতা।

অসতর্ক সাক্ষাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। মেহমান হয়ে দাঁড়াতে পারে মসিবতের কারণ। আদব-শিষ্টাচার ও সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা তাই অনস্বীকার্য।
বনু তামীমের কিছু লোক একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এল। নবীজী তখন বাড়িতে। আদব-শিষ্টাচার তাদের জানা ছিল না। তারা এসে তাই ঘরের পেছন থেকে ডাকতে লাগল- মুহাম্মাদ! আমাদের কাছে বেরিয়ে আসুন! নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডাক শুনে বেরিয়ে এলেন। মহান রাব্বুল আলামীন তখন পবিত্র কুরআনের আয়াত নাযিল করে আমাদের জানিয়ে দিলেন সাক্ষাতের কিছু আদব, কিছু শিষ্টাচার। কুরআনের ভাষায়-
اِنَّ الَّذِیْنَ یُنَادُوْنَكَ مِنْ وَّرَآءِ الْحُجُرٰتِ اَكْثَرُهُمْ لَا یَعْقِلُوْنَ، وَ لَوْ اَنَّهُمْ صَبَرُوْا حَتّٰی تَخْرُجَ اِلَیْهِمْ لَكَانَ خَیْرًا لَّهُمْ، وَ اللهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ.
যারা ঘরের পেছন থেকে তোমাকে ডেকেছে, সন্দেহ নেই, তাদের অধিকাংশই বোঝে না। তুমি তাদের কাছে বেরিয়ে আসা পর্যন্ত তারা যদি সবরের সঙ্গে অপেক্ষা করত, তবে তা তাদের জন্যে অবশ্যই কল্যাণকর হত। তবে আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, দয়ালু। -সূরা হুজুরাত (৪৯) : ৪-৫
বনু তামীমের এ ঘটনা এবং এ প্রেক্ষিতে নাযিল হওয়া দুটি আয়াত থেকে আমরা এ শিক্ষা পাই- যে কোনো সময় যে কারও সঙ্গে সাক্ষাতের জন্যে যাওয়া যাবে না।
যে কোনো সময় গিয়ে কারও বাড়ির বাইরে থেকে তাকে ডাকা যাবে না। অসময়ে করা যাবে না করাঘাতও। কেউ যখন বাড়ির ভেতরে থাকে, তো সেখানকার জগৎটা একান্তই তার নিজস্ব। যার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা, বাড়িতে তিনি বিশ্রামে থাকতে পারেন, বাড়িতে কোনো রোগী থাকতে পারে এবং তিনি সে রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকতে পারেন, একান্তই নিজস্ব কোনো কাজে মশগুল থাকতে পারেন, স্ত্রী-ছেলেমেয়েদের নিয়ে সময় কাটাতে পারেন। এখানে হস্তক্ষেপ করা কিংবা বিঘœ ঘটানোর অধিকার নেই কারও।
তাই সাক্ষাৎ করতে হবে সাক্ষাতের সময়ে। নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হতে না পারলে অপেক্ষায় থাকতে হবে- তিনি কখন স্বাভাবিক রুটিন অনুসারে বেরিয়ে আসেন; তখন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে।
Leave a Reply