কীভাবে বদ অভ্যাস দূর হবে

বদ অভ্যাস দূর করার জন্য নিজের মধ্যে শক্তি সঞ্চয় করতে হবে।
ঈমানী শক্তি এবং প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে হবে। প্রতিরোধ বলতে নফস ও শয়তানের আক্রমণ প্রতিরোধ করার শক্তি। আরেক লাগবে নিয়তের শক্তি।
আসলে ঈমানী শক্তি আর নিয়তের শক্তির সমন্বয়েই তৈরি হয় প্রতিরোধ-শক্তি। বদ অভ্যাস দূর করার জন্য যে প্রতিরোধ-শক্তি দরকার, নফস ও শয়তানের বিরোধিতার জন্য যে প্রতিরোধ-শক্তির প্রয়োজন, সেটি অর্জিত হয় ঈমানী শক্তি এবং নিয়তের শক্তির মাধ্যমে। এ দুই শক্তির যত ব্যবহার হবে, ততই বদ অভ্যাস দূর করা সহজ হবে। ততই নফস ও শয়তানের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়া সহজ হবে।
কিন্তু যদি এই দুই শক্তিকে ব্যবহার না করি, বরং নিজে হার মানতে থাকি, তাহলে কখনোই নফসের বিরোধিতা করা সম্ভব হবে না। শয়তানের বিরোধিতা করা সম্ভব হবে না। হালকা থেকে হালকা কোনো বদ অভ্যাসই দূর করা সম্ভব হবে না।
কথার কথা, একজন জর্দা খায়, জর্দা ছাড়া তার পান চলে না। ডাক্তার কাউকে ব্যবস্থাপত্রের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং এড়িয়ে যেতে বলেছেন। তার মিষ্টি খাওয়ার আদত, ডাক্তার বলেছেন, মিষ্টি খেতে পারবে না। তাহলে কীভাবে সে মিষ্টি খাওয়া ছাড়বে? কীভাবে জর্দা ছাড়বে? এগুলোর কোনো কোনোটি সরাসরি বদ অভ্যাস নয়, বরং ডাক্তারের পরামর্শে সাময়িক বিরত থাকতে হবে। আর জর্দার তো এমনিতেই ক্ষতি আছে। তাছাড়া জর্দা একেবারে কোনো ধরনের মাকরূহ বা অনুত্তম পর্যায়েও যে যায় না- এমনটা বলা মুশকিল।
যাইহোক, ডাক্তার যখন নিষেধ করেছেন, ছাড়তে হবে আপনাকে। অথবা পানের পাতা খেতে পারবেন, চুন-সুপারি খেতে পারবেন না। কী করবেন তখন? এগুলো ছাড়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই মুজাহাদা করতে হবে। সহজে ছাড়া যাবে না।
একজন বলেছিল, পান ছাড়া অনেক কঠিন! পান ছাড়া যায় না! আরেকজন বলে উঠল, ‘কে বলেছে ছাড়া কঠিন? আমি ত্রিশ বার ছেড়েছি’!
কত সহজ যে, তিনি ছাড়েন আবার শুরু করেন। এমনকি ত্রিশ বার ছেড়েছেন!
তো ত্রিশ বার ছাড়লেন, অথচ ছাড়তে পারলেন না! কিন্তু যেদিন আপনি নিয়তের শক্তি প্রয়োগ করবেন, পাকা নিয়ত করবেন যে- ‘আমি খাব না! খাব না বলেছি, খাব না, ইনশাআল্লাহ! যা হওয়ার হোক, আমি আর খাবই না; সেদিন থেকে আপনার এই অভ্যাস দূর হতে থাকবে- ইনশাআল্লাহ। এভাবে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হয়। এটা হল নিয়তের শক্তি। এটাকে আরবীতে বলা হয় আয্ম বিল জায্ম (عزم بالجزم) পাকাপোক্ত ইচ্ছা, আবার সঙ্গে দৃঢ় মনোবল। এমন পাকা নিয়ত এবং এমন মজবুত হিম্মত খুব দরকার।
Leave a Reply