সালাম অন্যের জন্য দোয়া

সবাই যখন নামাজে এক কাতারে দাঁড়ান, তখন মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকে না। ছোট–বড়, ধনী-গরিব, সাদা-কালোর ব্যবধান ঘুচে যায়। ইসলাম এই সমতারই শিক্ষা দেয় সব সময়।

সালাম ভ্রাতৃত্ব সুদৃঢ় করে; দূর করে হিংসা আর বিদ্বেষ। সালামে আল্লাহর জিকির পাওয়া যায়। সালাম অন্যের জন্য সর্বোত্তম দোয়া।

ইসলাম অভিবাদনের শিক্ষা দিয়েছে সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে। সালামে রয়েছে অন্যের জন্য আল্লাহর প্রশান্তি ও রহমতের প্রার্থনা। একজন মুসলিম অপর মুসলিমের সঙ্গে দেখা হলে সালাম জানানো কর্তব্য। এই কর্তব্যেও ইসলামের সেই সমতারই শিক্ষা দেয়। সালাম দেওয়ার ক্ষেত্রেও ছোট–বড়, ধনী-গরিব, সাদা-কালোতে কোনো ব্যবধান করা চলে না। এতে পার্থক্য–নির্বিশেষে পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে, এটাই সালামের শিক্ষা।

ছোটরা বড়দের সালাম দেবে, বড়রা ছোটদের, সন্তান মা-বাবাকে সালাম দেবে, মা-বাবা সন্তানদের, ছাত্র শিক্ষককে সালাম দেবে, শিক্ষক ছাত্রদের, গরিব ধনীদের সালাম দেবে, ধনী গরিবকে। সালামে কোনো ব্যবধান নেই। সালাম সবার জন্য, কোনো ব্যক্তি–বিশেষের জন্য নয়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা প্রকৃত ইমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা গড়ে না ওঠা পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত ইমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলব না, যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালোবাসতে লাগবে? তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালাম প্রচার করো।’ (তিরমিজি শরিফ: ২৬৮৮)

সালামের কথা এলেই আমরা ভাবি, ছোটরা বড়দের সালাম দেবে, সন্তান মা-বাবাদের সালাম দেবে, ছাত্ররা শিক্ষকদের সালাম দেবে, চাকরিজীবী তার নিয়োগকর্তাকে সালাম দেবে। কিন্তু রাসুল (সা.) সবাইকে সালাম দিতেন, ছোটদেরও।

হজরত আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন আনসারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতেন, তখন তাদের শিশুদের সালাম দিতেন, মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেন এবং তাদের জন্য দোয়া করতেন।’ (সুনানু নাসাঈ: ৮২৯১)

মুসলিমদের একমাত্র পরিচয় ইমান। ছোটদের সালাম দিতে হবে। গরিবকে অবজ্ঞা করা যাবে না। ইসলামের চোখে যে সবাই সমান, ভেদাভেদহীন সালামের মধ্য দিয়েও তার চমৎকার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *