পবিত্র হজ্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ

সউদী আরবের মিনায় হজযাত্রীদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। সৌদি সময়ানুযায়ী আজ ১৪ জুন ৮ জিলহজ শুক্রবার সকাল থেকে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই হাজীরা মিনার উদ্দেশে রওনা দেন। বাইতুল্লাহ থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। এ জন্য হজযাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় সৌদি মুয়াল্লিমরা আগের রাত থেকেই হজযাত্রীদের তাঁবুর শহর মিনায় নেয়া শুরু করেন। এশার নামাজের পর মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় রওনা হন হাজীরা। 

 ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আজ মুখরিত মিনা প্রান্তর।

এ বছর সারা বিশ্বের প্রায় ২০ লাখ মানুষ হজে অংশ নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে হজে গেছেন ৮২ হাজার ৭৭২ জন।

মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনা। হজের অংশ হিসেবে আজ ৮ জিলহজ মিনায় সারা দিন থাকবেন হাজিরা। ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। সন্ধ্যার পর মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা করবেন। সেখানে রাতযাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন। 

এরপর বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, কোরবানি ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে স্বাভাবিক পোশাকে মক্কায় কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ, সাঈ শেষে মিনায় ফিরে গিয়ে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান এবং প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ প্রতিবারের মতো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

মুসলিমের সবচেয়ে বড় এই জনসমাগম চলাকালে তীব্র গরম থাকতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছিল সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। চলমান তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও পৌঁছাতে পারে বলে হজযাত্রীদের সতর্ক করেছে দেশটি। এর আগে সৌদি আরবের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছিল, হজের সময় মক্কার তাপমাত্রা ৪৫ থেকে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।

গতবারও হজের সময় তীব্র গরম ছিল। ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানকালে অনেকে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এবারো একই ধরনের গরম থাকতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ আল-আব্দুল আলি বলেছেন, উচ্চ তাপমাত্রা এ বছরের হজ মৌসুমে একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। হজযাত্রীদের গরম থেকে সুরক্ষিত থাকতে তিনি মন্ত্রণালয় নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান। হজের সময় গরম থেকে বাঁচতে ছাতা ব্যবহার, বেশি বেশি পানি পান ও প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হিট স্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন কিংবা ক্লান্ত হয়ে গেলে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩২ হাজার স্বাস্থ্য সেবাকর্মী। রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *