অনুচিত তুলনা

অনুচিত তুলনা

বলতে পারেন, অযৌক্তিক কোন কাজটা মানুষ সবচেয়ে বেশি করে?

তুলনা। কথায় কথায় মানুষ তুলনা করে, অথচ সব মানুষই আলাদা। সবার প্রকৃতিই ভিন্ন ভিন্ন। দুজন মানুষের কাজ কখনোই এক হতে পারে না।

কিন্তু সমাজে বারবারই এই জিজ্ঞাসাটা করা হয়, কেন তোমার কাজটা অমুকের মতো হলো না? এই অনুচিত তুলনাসমূহের মধ্যে আবার সবচেয়ে অমূলক তুলনাটা কী জানেন? বাবা-মায়ের মধ্যে তুলনা। তোমার কাছে কে সবচেয়ে বেশি প্রিয়-বাবা নাকি মা? সংসারে কার অবদান বেশি? বাবা নাকি মায়ের? সন্তানের কাছে এই প্রশ্নগুলো আসলেই খারাপ এবং বিব্রতকর।

পরনির্ভর এই পৃথিবীতে কেউই অনর্থক এবং মূল্যহীন নয়। পৃথিবীটাকে সুস্থির এবং সচল রাখতে প্রত্যেক মানুষেরই নিজস্ব অবদান আছে। প্রাণশক্তি ছাড়া যেভাবে জীবন চলে না, অপরের সহযোগিতা ছাড়াও সেভাবে জীবন এগোতে পারে না।

তবে এত এত মুখাপেক্ষিতার ভিড়ে মানুষ, সমাজ, সর্বোপরি একটা সুস্থ পৃথিবীর সরল প্রবাহে দুজন মানুষের প্রয়োজন সর্বাপেক্ষা বেশি। তারা হলেন বাবা এবং মা। আদম হাওয়া ব্যতীত পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোনো শিশুই বাবা-মা ছাড়া একাকী জন্মেনি। জন্মাতে পারেও না। কোনো মা-ই তাঁর সঙ্গী বাবা ছাড়া সন্তান জন্মদানে সক্ষম নন। তেমনিভাবে কোনো বাবাও তাঁর সঙ্গিনী মা ছাড়া সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম।

একজন শিশুর অস্তিত্বের ক্ষেত্রে তাই দুজনের অবদানই সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনুরূপভাবে একটা পরিবার ও সমাজ সুস্থ এবং ভারসাম্যপূর্ণ রাখতে বাবা-মা দুজনেরই সমান দরকার পড়ে। এককভাবে শুধু কোনো মা ঘর গুছিয়ে রাখতে পারেন না। তদ্রূপ কোনো বাবাও একা একা সংসার চালিয়ে নিতে পারেন না। বরং দুইজনের বন্ডিং এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটা সমাজ; ফলশ্রুতিতে একটা পৃথিবী তরতর করে এগিয়ে চলে। তাই একজন মানুষ জন্ম থেকে নিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত বাবা-মা দুজনের কাছে সমানভাবে ঋণী।

বই: সুন্দর সম্পর্ক
লেখক: আমান বিন সাইফ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *