হতাশায় করণীয়!

সেই বহু বছর আগে হযরত ইয়াকুব আ. হারিয়েছেন নিজের প্রিয়তম পুত্র ইউসুফ আ.-কে।
তাঁর বিয়োগ-ব্যথায় এবং তাঁকে পাওয়ার আশায় যৌবন কেটে গেল।
বৃদ্ধকালে যখন ইউসুফ আ.-কে পাওয়ার আশায় আবার বুক বাঁধলেন তখন ইউসুফ আ.-এর অপর ভাইকেও হারালেন। বাধ্যর্ক্যজনিত দুর্বলতা, দৃষ্টিশক্তির ক্ষীণতা, নতুন করে সন্তান হারানোর ঘটনা যেন ইউসুফ আ.-কে হারানোর বেদনা পুনরায় জাগিয়ে দিল।
এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি হাল ছাড়লেন না। আল্লাহর রহমতের প্রতি অবিচল আস্থা-বিশ্বাস নিয়ে তিনি বললেন—
قَالَ اِنَّمَاۤ اَشْكُوْا بَثِّيْ وَ حُزْنِيْۤ اِلَي اللهِ وَ اَعْلَمُ مِنَ اللهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ، يٰبَنِيَّ اذْهَبُوْا فَتَحَسَّسُوْا مِنْ يُّوْسُفَ وَ اَخِيْهِ وَ لَا تَايْـَٔسُوْا مِنْ رَّوْحِ اللهِ اِنَّهٗ لَا يَايْـَٔسُ مِنْ رَّوْحِ اللهِ اِلَّا الْقَوْمُ الْكٰفِرُوْنَ.
আমি আমার দুঃখ ও বেদনার অভিযোগ (তোমাদের কাছে নয়) আল্লাহর কাছে করছি। আর আল্লাহ সম্পর্কে আমি যতটা জানি, তোমরা ততটা জান না। ওহে আমার পুত্রগণ, তোমরা যাও এবং ইউসুফ ও তার ভাইয়ের সন্ধান চালাও। তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। জেনে রেখ, আল্লাহর রহমত থেকে কেবল তারাই নিরাশ হয়, যারা কাফের। —সূরা ইউসুফ (১২) : ৮৬-৮৭
এ ঘটনা থেকে বোঝা গেল, দুনিয়াবী কঠিন থেকে কঠিন বিপদেও আল্লাহর রহমত থেকে হতাশ হওয়া যাবে না; বিপদের পর বিপদের সম্মুখীন হলেও না। আল্লাহর রহমতের কাছে আশা রাখতে হবে, ইনশাআল্লাহ, সকল বিপদ কেটে যাবে। বিপদ যদি নাও কাটে, তবু চিন্তা কীসের, আল্লাহ তো এর বিনিময়ে আখেরাতে অনেক অনেক বেশি দেবেন। তাছাড়া এমনও তো হতে পারে, এ বিপদটিকে আমি মনে করছি বিপদ, কিন্তু বাস্তবে সেটি আমার জন্য কল্যাণকর। দুনিয়ায় এমন কত কত ঘটনা রয়েছে, যেখানে আপত দৃশ্যমান বিপদ— পরিণামে কল্যাণকর প্রমাণিত হয়েছে।
Leave a Reply