যে ৬ ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না

মহানবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, যখন কোনো ব্যক্তি আল্লাহর কাছে দোয়া করে, তখন আল্লাহ হয় তার দোয়া কবুল করেন, নয়তো তার পথে আসা কোনো বিপদ দূর করে দেন।

ছয় ধরনের মানুষ আছে, যাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করবেন বলে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। তবে যদি কেউ ইসলামে অগ্রহণযোগ্য বা ইসলামের নিয়মবিরোধী কিছুর জন্য দোয়া করে, তবে তা কোনোভাবেই কবুল হয় না।
১. রোগীর দোয়া
রোগাক্রান্ত ব্যক্তির দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ গ্রহণযোগ্য। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমরা কোনো রোগীর কাছে যাও বা তাকে দেখতে যাও, তখন তাকে বলো যেন সে তোমার জন্য দোয়া করে। কারণ, তার দোয়া ফেরেশতাদের দোয়ার মতো।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩,৫৯৮)

২. রোজাদারের দোয়া
রোজাদারের দোয়া অত্যন্ত কার্যকর। অনেক আলেম রোজার সময়কে দোয়ার জন্য ‘সোনালি মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেন। নবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের দোয়া ইফতারের সময় ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১,৭৫৩)

৩. পিতার দোয়া
সাধারণত মায়েরা সন্তানের জন্য দোয়া করেন, কিন্তু বাবার দোয়া বিরল এবং তা অত্যন্ত কার্যকর। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তিনজনের দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল হয়—মজলুমের দোয়া, মুসাফিরের দোয়া ও পিতার সন্তানের জন্য দোয়া।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১,৯০৫)
৪. অনুপস্থিতিত ব্যক্তির জন্য দোয়া
যে ব্যক্তি অন্যের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করে, তার দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করে, তখন ফেরেশতা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তাই হোক।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৭৩২)

৫. মজলুম ব্যক্তির দোয়া

যিনি অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার দোয়া আল্লাহ সরাসরি কবুল করেন। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘মজলুমের দোয়া থেকে সাবধান হও। কারণ, তার ও আল্লাহর মধ্যে কোনো পর্দা নেই।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২,৪৪৮)
৬. মুসাফিরের দোয়া
ভ্রমণকারীর দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে গ্রহণযোগ্য। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তিনটি দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না—সন্তানের জন্য পিতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া ও মুসাফিরের দোয়া।’ (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১,৫৩৬)
দোয়া কবুলের কিছু সময়
দোয়া কবুল হওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি সময়ের কথাও হাদিসে বর্ণিত আছে। যেমন রাতের শেষ প্রহর বা ফজরের আগে, আজানের পর বা আজানের মধ্যবর্তী সময়ে, জমজমের পানি পান করার সময় এবং জুমার দিনে, বিশেষ করে আসরের পর থেকে মাগরিবের আগপর্যন্ত।

অনেক আলেম জোর দিয়ে বলেন, দোয়ার জন্য অজু করা জরুরি নয়; বরং হৃদয়ের পবিত্রতা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *