কীভাবে মহানবী (সা.)-কে ভালোবাসব

ভালোবাসা হৃদয়ে লালিত এক প্রবল আবেগ। হৃদয়ে প্রবল আবেগ থাকলে তার আলামত অবশ্যই বাহ্যিকভাবে তার প্রকাশ ঘটবে। ভালোবাসা মুখে উচ্চারিত কোনো দাবির নাম নয়। বরং এমন এক অনুভূতি যা হৃদয়কে শাসন করে। তখন মানুষের সব কর্মকাণ্ড তার হৃদয়ের বর্ণেই বর্ণময় হয়। কী সেই নিদর্শন যা প্রকাশ পেলে আমরা বুঝব যে, মহানবীকে ভালোবাসা যথাযথ হচ্ছে? সংক্ষেপে তেমন কয়েকটি নিদর্শন তুলে ধরছি।

নবীজির (সা.) অনুসরণ

কাজি আয়াজ (রহ.) বলেন, ‘মনে রাখবেন, ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে, তাকে সব ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়, তার মতো হতে চায়। নয়তো বোঝা যাবে, তাঁর ভালোবাসা সত্য নয়; কেবল দাবিদার মাত্র। সুতরাং নবীপ্রেমে সে-ই সত্যনিষ্ঠ, যার ওপর ভালোবাসার আলামত প্রকাশ পায়। এ ক্ষেত্রে প্রথম আলামত হলো, নবীজিকে (সা.) অনুসরণ করা, তার সুন্নতগুলো কাজে পরিণত করা, কথা-কর্মে তাঁর আনুগত্য করা, তার আদেশ পালন করা ও নিষেধ করা কাজগুলো না করা এবং সুখে-দুঃখে ও ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সর্বাবস্থায় তার আদর্শে অনুগামী থাকা। (আশ-শিফা, ২/৫৭১)

নবীজির (সা.) বিধানে সন্তুষ্ট থাকা

মহানবী (সা.) যা বিধান দিয়েছেন, যা তিনি বিচার বা ফয়সালা করেছেন, সে-বিষয়ে অন্তরে কোনো রকম সংকীর্ণতা স্থান দেওয়া যাবে না। বরং তা-ই সঠিক মনে করতে হবে। তা যে বিষয়েই হোক। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘অতএব, আপনার প্রতিপালকের শপথ, তারা ইমানদার হবে না, যতক্ষণ তাদের বিবাদে আপনাকে ন্যায়বিচারক না মানবে। তখন তারা আপনার সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে নিজেদের মনে কোনো সংকীর্ণতা রাখবে না এবং তা সন্তুষ্টচিত্তে তা কবুল করে নেবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৬৫)

নবীজিকে (সা.) বেশি বেশি স্মরণ করা

কাজি আয়াজ (রহ.) বলেন, ‘নবীপ্রেমের একটি আলামত হলো, তাকে বেশি বেশি স্মরণ করা। কেননা, মানুষ যা ভালোবাসে, তার স্মরণ বেশি করে। (আশ-শিফা, ২/৫৭২)

এটাই বাস্তবতা। যদি সব অবস্থায় নবীজির (সা.) সুন্নত অনুসরণ করা হয়, প্রতিটি কাজে নবীজির (সা.)কাজের অনুকরণ করা হয় এবং কথায় কথায় নবীজির (সা.)কথা তুলনা সামনে আনা হয়, তাহলে তাঁর স্মরণ কীভাবে বেশি না হয়ে পারে?

নবীজি(সা.)র বন্ধুকে বন্ধু ও শত্রকে শত্রু ভাবা

যে ব্যক্তি নবীজিকে (সা.) ভালোবাসে, নিশ্চয় সে তাকেও ভালোবাসবে, যাকে নবীজি(সা.) ভালোবেসেছেন এবং তাকে অপছন্দ করবে, তিনি যাকে অপছন্দ করেছেন। নবীজি (সা.) তার পরিবার ও সাহাবিদের ব্যাপারে অসিয়ত করেছেন, যেনর আমরা তাদের ভালোবাসি এবং তাদের সমালোচনার পাত্র না বানাই। সুতরাং একজন নবী প্রেমিক অবশ্যই নবী-পরিবার ও সাহাবিদের ভালোবাসবে। (মিন মায়িনিশ শামায়েল, সালেহ আহমাদ শামি, ৪৫০)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *