একজন শাষকের যে সকল গুণ থাকা আবশ্যক

আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে বিভিন্ন গুণ, দায়িত্ব এবং অধিকার প্রদান করেছেন, যা তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। ক্ষমতা, শাসন, এবং নেতৃত্ব এমনই একটি বিশেষ ক্ষেত্র, যেখানে আল্লাহর নির্দেশনা ও বিচার অপরিহার্য। ক্ষমতা একজনের জন্য বরকতও হতে পারে, আবার অভিশাপও হতে পারে, এটি নির্ভর করে সেই ক্ষমতা কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তার উপর।
ক্ষমতা যদি আল্লাহর ভয় এবং জবাবদিহিতার মনোভাব নিয়ে পরিচালিত হয়, তবে তা নিঃসন্দেহে বরকতময় এবং আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। অন্যদিকে, যদি ক্ষমতা জুলুম, শোষণ, এবং অন্যায়ের হাতিয়ার হয়, তবে তা শাসকের এবং সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য বিপদ ও অভিশাপ বয়ে আনে। কুরআন মজীদে আদর্শ শাসকের সাফল্য এবং জালিম শাসকদের করুণ পরিণতির উদাহরণগুলো উল্লেখিত হয়েছে।
উপর্যুক্ত আয়াত এবং কাহিনীগুলো থেকে বোঝা যায়, একজন আদর্শ শাসকের কর্তব্য হলো আল্লাহমুখী হওয়া, ইনসাফ কায়েম করা, এবং আল্লাহর বিধান অনুযায়ী সকল বিচার কার্য সম্পাদন করা। সঠিক পথে অবিচল থাকা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করাই একজন শাসকের প্রধান বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত।
একজন আদর্শ শাসককে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে, জনসাধারণের জন্য অকাতরে খরচ করতে হবে এবং আল্লাহর শোকর আদায় করতে হবে। এছাড়াও, একজন শাসকের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ হলো স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার, যা তাকে একটি আদর্শ নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
কুরআনের নির্দেশনা অনুসারে, আল্লাহর বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করা এবং অন্যায় সুবিধা গ্রহণ এড়িয়ে চলা একজন শাসকের জন্য অপরিহার্য। এর মাধ্যমে, একটি সমাজ শান্তি এবং নিরাপত্তার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, এবং আল্লাহর বরকত প্রাপ্ত হতে পারে।
অতএব, একজন শাসককে সর্বদা কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা উচিত এবং আল্লাহর দয়া এবং রহমতের উপর নির্ভর করে চলা উচিত। এর মাধ্যমে তিনি নিজে যেমন আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কৃত হবেন, তেমনি তার জনগণের জন্যও কল্যাণ বয়ে আনবেন।
শাষকের যে কয়েকটি গুণ থাকা অবশ্যক।
১. আল্লাহ ও পরকালমুখিতা থাকা যাবেনা।
২. ইনসাফ কায়েম করা।
৩. সৎপথে অবিচল থাকা এবং অন্যায় পরিহার করা।
৪. শিষ্টের লালন ও দুষ্টের দমন।
৫. আল্লাহর প্রতি ভরসা ও অকাতরে জনগণের জন্য খরচ করা।
৬. জনসাধারণের খেদমতকে সৌভাগ্য মনে করা এবং শোকর আদায় করা।
৭. রক্ষণাবেক্ষণে পূর্ণ যোগ্যতা ও স্বচ্ছতা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পূর্ণ ধারণা থাকা।
৮. ঘুস-উৎকোচ ও অন্যায় সুবিধা গ্রহণ এড়িয়ে চলা।
৯. স্বচ্ছতা, আমানতদারি ও ন্যায়বিচার।
১০. আল্লাহর বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করা আদর্শ শাসকের অন্যতম প্রধান গুণ।
প্রিয় পাঠক!
জীবনের কোনো না কোনো ক্ষেত্রে, কোনো না কোনো অঙ্গনে সবাইকে নিতে হয় কিছু না কিছু শাসন ও দায়িত্বভার। হোক তা নিজের বা পরিবারের, হোক প্রতিষ্ঠান বা সমাজের কিংবা দেশ ও রাষ্ট্রের। সবক্ষেত্রেই কুরআনী শিক্ষাগুলো আমাদের জন্য পাথেয়।
Leave a Reply