পরিবারকে দ্বীনের পথে চলার আদেশ করা

এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا.
‘আপনি আপনার পরিবারের লোকদেরকে সালাতের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন।’ [সুরা ত্বহা ২০: ১৩২]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا.
‘মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা করো।’ [সুরা তাহরিম ৬৬: ৬]

আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, আলি রাদিয়াল্লাহু আনন্দ ছেলে হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহু সাদাকাহর খেজুর থেকে একটি খেজুর নিয়ে মুখে দিলেন। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, কাখ, কাখ , তুমি ওটা মুখ থেকে ফেলে দাও। তোমার কি জানা নেই যে, আমরা সাদাকাহের জিনিস খাই না?
অন্য বর্ণনায় আছে-নিশ্চয় আমাদের জন্য সাদাকাহ হালাল নয়।

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা: নবির পরিবারদের জন্য সাদাকাহ ও জাকাত খাওয়া বৈধ ছিল না; তাদের জন্য হাদিয়া-উপঢৌকন বৈধ ছিল। সাদাকাহের কোনো জিনিস এলে নবিজি আহলে সুফফা বা অন্য গরিব সাহাবিদের মাঝে বণ্টন করে দিতেন। তবে কেউ তার জন্য হাদিয়া পাঠালে সেটা পরিবার ও নিজে গ্রহণ করতেন এবং অন্যান্য সাহাবিদেরকেও দিতেন।

بن عبد الأسد ربيب رَسُول الله أبي سلمة عبد الله . حفص عمر بن عن أبي . صلى الله عليه وسلم قَالَ: كُنْتُ غلامًا في حجر رسول الله صلى الله عليه وسلم وَكَانَتْ يَدي تَطِيشُ في الصَّحْفَةِ، فَقَالَ لي رَسُول الله صلى الله عليه وسلم: «يَا غُلامُ، سَمَّ الله تَعَالَى، وَكُلْ بِيَمِينِكَ، وَكُلْ مِمَّا يَلِيكَ فَمَا زَالَتْ تِلْكَ طِعْمَتِي بَعْدُ.
আবু হাফস উমর ইবনু আবি সালামা আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল আসাদ থেকে বর্ণিত, তিনি নবিজির তত্ত্বাবধানে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি ছোটকালে একবার নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোলে ছিলাম। খাবারের সময় খাবারের পেয়ালাতে আমার হাত সবখানে ঘুরত। (প্লেটের সব সাইট থেকে খাবার নিতাম) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন আমাকে বললেন, হে ছেলে, আল্লাহর নাম নিয়ে ডান হাতে খাও এবং তোমার পাশ থেকেই খাও। এরপর থেকে আমি সেভাবেই আহার করছি।

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা: আবু হাফস উমর ইবন আবি সালামা আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল আসাদ তিনি ছিলেন নবিজির স্ত্রী উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহার আগের স্বামীর সন্তান। সে নবিজির কাছেই বড় হয়েছিল। ছোটবেলায় নবিজির সাথে আমার করত। নবিজি তখন তাকে এই আদব শিখিয়েছিলেন।
ইবনু উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক মানুষ দায়িত্বশীল, আর প্রত্যেক দায়িত্বশীল তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। আমির বা নেতা জনগণের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, সুতরাং সে তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল, অতএব সে তার অধীনস্থদের দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। নারীরা স্বামীর বাড়ি ও সন্তানের ব্যাপারে দায়িত্বশীল। সুতরাং সে তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। খাদেম বা গোলাম তার মনিবের সম্পদের দায়িত্বশীল, তাই সে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। মোটকথা, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল, আর তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হতে হবে।

عن عمرو بن شعيب عن أبيه، عن جده رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُول الله
صلى الله عليه وسلم: «مُرُوا أَوْلادَكُمْ بِالصَّلَاةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ،
وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا، وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرٍ، وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي المَضَاجِعِ»
আমর ইবনু শুআইব রাদিয়াল্লাহু আনহু তার পিতা ও তার দাদার থেকে বর্ণনা করে বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের সন্তানাদি সাত বছরে পৌঁছলে তোমরা তাদের সালাত আদায় করাতে আদেশ করো। আর যখন সন্তান দশ বছরে উপনীত হবে, তখন তাদেরারে সালাতের জন্য প্রহার করো। পাশাপাশি তাদের বিছানা আলাদা করে দাও।
عن أبي تُرَيَّةَ سَبْرَةَ بن معبد الجُهَنِيَّ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولِ الله صلى الله عليه وسلم: «عَلَّمُوا الصَّبِيَّ الصَّلاةَ لِسَبْعِ سِنِينَ، وَاضْرِبُوهُ عَلَيْهَا ابْنَ عَشْرِ
سنين
ولفظ أبي داود: «مُرُوا الصَّبِيَّ بِالصَّلَاةِ إِذَا بَلَغَ سَبْعَ سِنِينَ»
আবু সুরাইয়াহ সাবরাহ ইবনু মাঅবাদ জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানকে সাত বছর থেকেই সালাত শেখাও। আর দশ বছরে পৌঁছলে (প্রয়োজনে) সালাতের জন্য (হালকা) প্রহারও করো।
সুত্র- রিয়াদুস সালেহিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *