হজ্বের মাধ্যমে বান্দা সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়

ইসলামের পাঁচটি মূল ভিত্তির মধ্যে চতুর্থ ও অন্যতম হচ্ছে হজ্জ। মহান রাব্বুল আলামিন সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলিমের উপর দ্রুত হজ্জ সম্পাদন করা ফরয করেছেন। হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য হজ্জ করল এবং এ হজ্জের মধ্যে কোনো অশ্লীল কথা ও কর্মে লিপ্ত হলো না সে ওই দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে প্রত্যাবর্তন করে যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল।’ বুখারি, মুসলিম, মিশকাত। এ হাদিস দ্বারা বোঝা গেল, হজ্জ পাপ মোচনের এক শক্তিশালী মাধ্যম। হজ্জ কবুল হলে মানুষ সম্পূর্ণরূপে নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর এ হজের পুরস্কার হচ্ছে জান্নাত।

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এক ওমরাহ অন্য ওমরাহ পর্যন্ত কাফফারাস্বরূপ এবং কবুল হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া অন্য কিছু নয়।’ বুখারি, মুসলিম, মিশকাত।

এ হাদিস দ্বারা বোঝা গেল, একবার ওমরাহ করার পর আর একবার ওমরাহ করলে মধ্যবর্তী গুনাহসমূহ মুছে যাবে। আর কবুল হজ্জের প্রতিদান জান্নাত। হজ্জ কবুল হলে আল্লাহ তাকে নিঃসন্দেহে জান্নাত দান করবেন। কারণ এটাই তার চূড়ান্ত প্রতিদান।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের ওমরাহ হজ্জের সমান। বুখারি, মুসলিম, মিশকাত।
এ হাদিস দ্বারা বোঝা গেল, রমজানে ওমরাহ করলে কবুল হজ্জের সমান নেকি দেওয়া হবে। আর কবুল হজ্জের প্রতিদান হচ্ছে জান্নাত।’

হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা হজ্জ ও ওমরাহ একসঙ্গে কর। কেননা হজ্জ ও ওমরাহ এমনভাবে দরিদ্র ও গুনাহ দূর করে যেভাবে কামারের হাপর লোহা ও সোনা-রুপার মরিচা দূর করে। কবুল হজ্জের সওয়াব জান্নাত ছাড়া কিছুই নয়।’ মিশকাত।

এ হাদিস দ্বারা বোঝা গেল, হজ্জ-ওমরাহ একসঙ্গে করা ভালো। যার নাম কিরান। তবে ওমরাহ করার পরও হজ্জ করা যায়। যার নাম তামাত্তু। কামারের হাপর যেভাবে আগুনের সাহায্যে লোহা ও সোনা-রুপার মরিচা দূর করে দেয় তেমনি হজ্জ ও ওমরাহ মানুষের গুনাহ মুছে দেয়। এজন্য রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হজ্জের চূড়ান্ত প্রতিদান জান্নাত।’

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, ‘তিন ব্যক্তি আল্লাহর যাত্রী। গাজী, হাজ্বী ও ওমরাহ পালনকারী।’ নাসায়ি, আলবানি, মিশকাত। এ হাদিস দ্বারা প্রতীয়মান হয়, যারা হজ্জ ও ওমরাহ পালন করে তারা আল্লাহর দল বা দূত কিংবা আল্লাহর পথের যাত্রী।

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) নবী করিম রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, ‘হজ্জ ও ওমরাহকারীরা হচ্ছে আল্লাহর দাওয়াতি যাত্রী দল। অতএব তারা যদি তাঁর কাছে দোয়া করে তিনি তা কবুল করেন এবং যদি তাঁর কাছে ক্ষমা চান তিনি তাদের ক্ষমা করে দেন।’ ইবনে মাজাহ, মিশকাত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *