নিরাশ হয়ো না, তিনি সব গোনাহ মাফ করে দেন।

নিরাশ হয়ো না, তিনি সব গোনাহ মাফ করে দেন

পাপের বোঝায় ন্যুব্জ কোনো বান্দা মনে করতে পারে- আমার গোনাহ তো অনেক বেশি; কয়েক পৃথিবী পূর্ণ হয়ে যাবে আমার পাপ দ্বারা। মদ, যিনা, হত্যা, লুণ্ঠন কোন পাপ নেই যা আমি করিনি; জীবনটাই কেটেছে পাপের মাঝে। এখন আর তওবা করে কী হবে? তাছাড়া আমার মত পাপীকে কি আল্লাহ ক্ষমা করবেন!

তো এমন পাপীর জন্যও আল্লাহ ক্ষমার ঘোষণা দিলেন- তুমিও নিরাশ হয়ো না আল্লাহর রহমত থেকে; তোমারও সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত-

কিছু মুশরিক নবীজীর কাছে এল, যারা মানুষ হত্যা করেছে; অগণিত মানুষকে হত্যা করেছে। যারা যিনা করেছে; প্রচুর পরিমাণে যিনা করেছে। তারা বলল, আপনি যা বলেন এবং যেদিকে আহ্বান করেন তা তো খুব সুন্দর ও উত্তম। যদি আপনি আমাদের বলতেন যে, আমাদের অতীত পাপের কাফফারা আছে! তখন নাযিল হল-

وَ الَّذِیْنَ لَا یَدْعُوْنَ مَعَ اللهِ اِلٰهًا اٰخَرَ …

এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য কোনো মাবুদের ইবাদত করে না। এবং আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন তাকে অন্যায়ভাবে বধ করে না এবং ব্যভিচার করে না। (যে ব্যক্তিই এরূপ করবে তাকে তার গোনাহের শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ করা হবে। এবং সে লাঞ্ছিত অবস্থায় তাতে সর্বদা থাকবে।

তবে কেউ তওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে, আল্লাহ এরূপ লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।) [সূরা ফুরকান (২৫) : ৬৮-৭০]

এবং নাযিল হল-

قُلْ یٰعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ، ( اِنَّ اللهَ یَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِیْعًا، اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ).

বলে দাও, হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের উপর অবিচার করেছ- আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। (আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।) [সূরা যুমার (৩৯) : ৫৩] -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৮১০

সূরা যুমারের ৫৩ নং আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর রাহ. কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেন। এরপর বলেন-

فَهَذِهِ الْأَحَادِيثُ كُلّهَا دَالّةٌ عَلَى أَنّ الْمُرَادَ: أَنّهُ يَغْفِرُ جَمِيعَ ذَلِكَ مَعَ التّوْبَةِ…

এসকল হাদীস থেকে বুঝা যায়, এ আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য, আল্লাহ সকল গোনাহ ক্ষমা করেন- তওবার শর্তে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা যুমার, ৫৩ নং আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য)

-মুহাম্মাদ ফজলুল বারী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *