আপনি কি একজন স্নেহপরায়ণ জননী?

আপনি কি একজন স্নেহপরায়ণ জননী

মনে করুন, একজন স্নেহপরায়ণ জননী, তার সারা জীবনের লক্ষ্য থাকে সন্তানদের বিপদমুক্ত রাখা।

সন্তানকে সব ধরনের ধ্বংস থেকে রক্ষা করা। দুনিয়াতে যেন সব সমস্যা থেকে মুক্ত থাকে, সুস্থ থাকে এবং নিরাপদ থাকে, প্রতিটি মায়ের তার সন্তানের ব্যাপারে এই চেষ্টা-ই থাকে। সে বলে, আমার ছেলে অনেক বড় হবে। সচিব হবে, মন্ত্রী হবে।

এ উদ্দেশ্যে সে ছেলেকে ইউরোপে পাঠায়। নিজের সব সহায় সম্পত্তি সন্তানের জন্য ব্যয় করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। এত কিছু করে, অথচ সে ভাবেও না যে, তার সন্তানকে পরকালে কত শঙ্কা মুখোমুখি হতে হবে। নারী তার সন্তানকে দুনিয়ার কয়েদখানা থেকে বাঁচাতে ছোটাছুটি করে, অথচ এটা দেখে না যে, তার সন্তান জাহান্নামের কয়েদখানায় প্রবেশ করছে। এটাও খেয়াল করে না যে, সে নিজেই তার সন্তানকে নিজের বিরুদ্ধে দাঁড় করাচ্ছে।

তার সন্তান কেয়ামতে তার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে দাঁড়াবে। হওয়া উচিত ছিল এই, তার আদরের দুলাল হাশরের ময়দানের কঠিন সময়ে তার জন্য সুপারিশকারী হবে। নারীর ভেতর যে মমত্ব-তার দাবি ছিল এমনই। কিন্তু সে এই স্বভাবজাত মমত্বের বিপরীতে সন্তানকে এমনভাবে গড়ে তুলেছে যে, কদিন বাদেই প্রিয় সন্তান আল্লাহর আদালতে বলে বসবে, হে জননী ! তুমিই আমার ধ্বংসের কারণ হয়েছ। বলো, কেন তুমি আমার ঈমান সুদৃঢ় না। করে আমায় চিরকালের ধ্বংস গহ্বরে ঠেলে দিলে? আমার ধ্বংসের কারণ কেন হলে তুমি?

এই মা যদি তার অসহায় শিশুকে জাহান্নামের চিরস্থায়ী কয়েদখানা এবং গোমরাহির মৃত্যু থেকে বাঁচাতে মায়ের ভেতরে থাকা সত্যিকারের মমত্বকে কাজে লাগাত, আদর স্নেহকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানত, তাহলে এই বাচ্চাটি মায়ের মৃত্যুর পর সার্বক্ষণিক সৎকাজের মাধ্যমে মায়ের আত্মায় আলো পৌঁছাত।

সন্তানের নেক আমলের সওয়াব তার মায়ের আমলনামায় যুক্ত হতে থাকত। তারপর এই সন্তান আখেরাতে মায়ের বিরুদ্ধে বাদী হবার পরিবর্তে মনপ্রাণ দিয়ে মায়ের পক্ষে সুপারিশকারী হয়ে যেত। চিরস্থায়ী জীবনে এ সন্তান তার মায়ের জন্য বরকতময় সাব্যস্ত হতো।

নাম : নারীদের পথনির্দেশিকা
লেখক: বদিউজ্জামান সাঈদ নূরসী
প্রকাশনী: : সোজলার পাবলিকেশন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *