জুমার দিন করনীয় আমল সমুহ

♦ ১-মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল করবে, যথাসাধ্য পবিত্রতা অর্জন করবে, তেল ব্যবহার করবে, অথবা নিজ পরিবারের সুগন্ধি নিয়ে ব্যবহার করবে, অতঃপর (জুমআর জন্য) বের হয়ে (মসজিদে) দুই নামাযীর মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করবে না (কাতার চিরবে না), অতঃপর যতটা তার ভাগ্যে লিখা আছে ততটা নামায পড়বে, অতঃপর ইমাম খুতবা দিলে চুপ থাকবে, সে ব্যক্তির এই জুমুআহ থেকে আগামী জুমুআহ পর্যন্ত কৃত পাপ মাফ হয়ে যাবে।” (বুখারী, মিশকাত ১৩৮১নং)
♦ ২-মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল করে, খোশবূ থাকলে তা ব্যবহার করে এবং তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাকটি পরিধান করে, অতঃপর স্থিরতার সাথে মসজিদে আসে, অতঃপর ইচ্ছামত নামায পড়ে এবং কাউকে কষ্ট দেয় না, অতঃপর ইমাম বের হলে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত নিশ্চুপ থাকে, সে ব্যক্তির এ কাজ দুই জুমআর মাঝে কৃত গুনাহর কাফফারা হয়ে যায়।” (আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ, মিশকাত ১৩৮৭নং)
♦ ৩-পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার মর্যাদা অনেক। আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন (মাথা) ধৌত করে ও যথা নিয়মে গোসল করে, সকাল-সকাল ও আগে-আগে (মসজিদে যাওয়ার জন্য) প্রস্তুত হয়, সওয়ার না হয়ে পায়ে হেঁটে (মসজিদে) যায়, ইমামের কাছাকাছি বসে মনোযোগ সহকারে (খোতবা) শ্রবণ করে, এবং কোন অসার ক্রিয়া-কলাপ করে না, সে ব্যক্তির প্রত্যেক পদক্ষেপের বিনিময়ে এক বৎসরের নেক আমল ও তার (সারা বছরের) রোযা ও নামাযের সওয়াব লাভ হয়!” (আহমাদ,আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্, সহিহ তারগিব ৬৮৭ নং)
♦ ৪- সূরা কাহ্ফ পাঠ :
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমআর মধ্যবর্তীকাল জ্যোতির্ময় হবে।”(নাসাঈ, সুনান, বায়হাকী,হাকেম, মুস্তাদরাক, সহিহ তারগিব ৭৩৫ নং)
অন্য বর্ণনায় আছে, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পাঠ করবে তার জন্য তার ও কা’বা শরীফের মধ্যবর্তী জ্যোতির্ময় হবে।” (বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, জামে ৬৪৭১নং)
♦ ৫-বেশী বেশী দরুদ পাঠ :
জুমআর রাতে (বৃহ্স্পতিবার দিবাগত রাতে) ও (জুমআর) দিনে প্রিয়তম হাবীব মহানবী (সাঃ)-এর শানে অধিকাধিক দরুদ পাঠ করা কর্তব্য। মহানবী (সাঃ) বলেন, “তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল, জুমআর দিন। এই দিনে তোমরা আমার প্রতি দরুদ পাঠ কর। যেহেতু তোমাদের দরুদ আমার উপর পেশ করা হয়ে থাকে। (আবূদাঊদ, সুনান ১৫৩১নং)
তিনি আরো বলেন, “জুমআর রাতে ও দিনে তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরুদ পাঠ কর। আর যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করবে, সে ব্যক্তির উপর আল্লাহ ১০ বার রহ্মত বর্ষণ করবেন।”(বায়হাকী, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৪০৭নং)
♦ ৬-জুম্মার দিনে দুয়া কবুল হয়।আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা জুমার দিন সম্বন্ধে আলোচনা করে বললেন,
“ওতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোন মুসলিম ব্যক্তি যদি ঐ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নামায অবস্থায় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে তা দান করে থাকেন।”
এ কথা বলে তিনি স্বীয় হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত। (বুখারী ও মুসলিম)
আবূ বুর্দাহ ইবনে আবূ মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘আপনি কি জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্ত সম্পর্কে আপনার পিতাকে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করতে শুনেছেন?’ তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।
আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “সেই মুহূর্তটুকু ইমামের মেম্বারে বসা থেকে নিয়ে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়ের ভিতরে।” (মুসলিম)
Leave a Reply