হে আল্লাহ!

যখন সমুদ্র উত্তাল হয়, বিক্ষুব্ধ বায়ুতে পানি তরঙ্গায়িত হয়, নৌকার আরোহীগণ তখন চিৎকার করে বলে ওঠে, হে আল্লাহ!
যখন মুসাফির মরুভূমিতে পথ হারিয়ে ফেলে, কাফেলা দিকভ্রান্ত হয়ে যায়, তখন ফরিয়াদ করে বলে, হে আল্লাহ!
যখন মসিবত এসে আপতিত হয়, দুর্যোগ-দুর্বিপাক এসে দেখা দেয়, তখন বিপদ গ্রস্তরা বলে ওঠে, হে আল্লাহ!
যখন প্রার্থীদের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়, অভাবীদের বঞ্চিত করা হয়, তখন তারা হাহাকার করে বলে ওঠে, হে আল্লাহ!
যখন চেষ্টা-তদবির বিফল হয়ে যায়, আশা-ভরসা সঙ্গ ত্যাগ করে, উপায়-উপকরণ বিকল হয়ে যায়, সমস্ত পথ যখন রুদ্ধ হয়ে যায়, তখন মানুষ আর্তনাদ করে বলে ওঠে, হে আল্লাহ!
পৃথিবী সুপ্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও যখন আপনার জন্য সংকীর্ণ হয়ে ওঠবে, দুঃখ-দুর্দশায় যখন আপনার প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে যাবে, তখন আপনিও চিৎকার করে ডেকে বলুন, হে আল্লাহ!
সকল ভালো কথা, একনিষ্ঠ আহবান, খাটি দোয়া, নিম্পাপ অশ্রু, ভারাক্রান্ত হৃদয়ের আকুতি- সবই আল্লাহর দরবারে পৌছে। প্রয়োজনের সময় অধরাত্রির দোয়ায় তারই দিকে হাত প্রসারিত হয়; বিপদাপদে চোখ তারই দিকে তাকিয়েথাকে; দুঃখ-বেদনায় ফরিয়াদ তারই কাছে করা হয়।
আহবান, প্রার্থনা ও ফরিয়াদে তার নামই তার জবানে থাকে। হৃদয়-মন তার নামেই প্রশান্তি লাভ করে; স্নায়ু শীতল হয়; বোধ ফিরে আসে এবং দৃঢ়তা সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু।
(সূরা শুরা : ১৯)
আল্লাহ– কী সুন্দর নাম!
কত প্রিয় শব্দ!
কত মূল্যবান ও বিশুদ্ধতম কালিমা!
তুমি কি তার সমগুণ সম্পন্ন কাউকে জান? (সূরা মারইয়াম : ৬৫)
‘আল্লাহ’ নামটি উচ্চারণ করুন, দেখবেন সাথে সাথে আপনার অন্তরে শক্তি-সাহস-দৃঢ়তা, আভিজাত্য-আত্মমর্যাদা ও নির্ভীকতা সৃষ্টি হবে। ‘আজ কর্তৃত্ব কার? মহাপরাক্রমশালী আল্লাহরই।
(সূরা মু’মিন : ১৬)
‘আল্লাহ’ নামটি উচ্চারণ করুন, দেখবেন দয়া-অনুগ্রহ, স্নেহ-মমতা মায়-মহব্বত ও ভালোবাসার আলোকচ্ছটা অনুভূত হবে। তোমাদের নিকট যত নেয়ামত আছে, তা আল্লাহরই পক্ষ থেকে।
(সূরা নাহল : ৫৩)
আল্লাহ মহান, পরাক্রমশালী ও মহীয়ান। হে আল্লাহ! দুঃখ-কষ্টকে আনন্দে পরিণত করে দিন। অস্থিরতাকে দৃঢ়তা এবং ভয়-ভীতিকে সাহসে রূপান্তরিত করে দিন ।
হে আল্লাহ! অন্তরের আগুনকে ইয়াকীনের শীতলতা দ্বারা ঠান্ডা করে দিন । হে আল্লাহ! ঘুমহীনদের নিবিড় ঘুম দান করুন। অস্থির হৃদয়েপ্রশান্তি দান করুন। তাদেরকে দ্রুত কামিয়াব করুন। দয়াময় আল্লাহ! অদূরদর্শীদের নূর ও পথভ্রষ্টদের সঠিক পথের দিশা দান করুন। হে আল্লাহ! অন্তরের কুমন্ত্রণাসমূহ নূরানী আলোর ছটায় দূর করে দিন। বাতিল পূজারী নফসের শ্বাস রুদ্ধ করে দিন; তার চক্রান্তকে আপনার সাহায্য দ্বারা ধ্বংস করে দিন ।
লেখক : শেইখ ড. আয়িদ আল ক্বরনীর
বই : লা তাহযান বা হতাশ হবেন না
Leave a Reply