অজ্ঞতার প্রতিকার

নবী কারীম অজ্ঞতাকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

এই রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে জ্ঞানী বা আলিম ব্যক্তিবর্গের শরণাপন্ন হতে হবে, তাঁদের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে অজ্ঞতাকে দূর করে করতে হবে।

সুনানু আবি দাউদে জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু’র ভাষ্যে একটি ঘটনা বিবৃত হয়েছে। তিনি বলেন,
শীতকালে আমরা একটি সফরে ছিলাম। পাথরের আঘাতে আমাদের এক সফরসঙ্গীর মাথা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ঘটনাক্রমে ওই রাতে তাঁর স্বপ্নদোষ হয়ে যায়। কিন্তু পবিত্রতা হাসিল করতে গোসল করাকে তিনি আঘাতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলেন।

সফরসঙ্গীদের নিকট পরামর্শ চাইলেন—এই অবস্থায় গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করা যাবে কি না। সঙ্গীরা তাৎক্ষণিক জানা-শোনা থেকে বললেন, “যেহেতু পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে, আর তুমিও পানি ব্যবহারে সক্ষম, তাই আমরা তোমার জন্য তায়াম্মুম করার কোনো অবকাশ দেখছি না।”

এ কথা শুনে তিনি গোসল করে নিলেন। ফলে ক্ষতস্থান দিয়ে মাথার ভেতরে পানি ঢুকে যায় এবং তিনি মারা যান।

এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর নবীজির কাছে পৌঁছুলে নবীজির ইরশাদ করেন—
قَتَلُوهُ قَتَلَهُمُ اللَّهُ أَلَا سَأَلُوا إِذَا لَمْ يَعْلَمُوا؟ فَإِنَّمَا شِفَاءُ الْعِيَ السُّؤَالُ إِنَّمَا كَانَ يَكْفِيهِ أَنْ يَتَيَمَّمَ وَيَعْصِرَ – أَوْ يَعْصِبَ – عَلَى جُرْحِهِ خِرْقَةٌ ثُمَّ يَمْسَحُ عَلَيْهَا، وَيَغْسِلُ سَائِرَ جَسَدِهِ
“তার সঙ্গীরা তাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। তারা যেহেতু জানত না, তাহলে কেন তারা জিজ্ঞেস করল না! অজ্ঞতা নামক ব্যাধির |

চিকিৎসা হলো প্রশ্ন করা।

এই ব্যক্তির জন্য তো তায়াম্মুমই যথেষ্ট ছিল। অথবা মাথায় একটি ব্যান্ডেজ বেঁধে গোসল করলেও পারত, এমতাবস্থায় ব্যান্ডেজের ওপর মাসেহ করে নিলেই হতো|”

উল্লিখিত হাদীসে নবী কারীম খুব স্পষ্টভাবেই একটি বিষয় তুলে ধরেছেন যে, অজ্ঞতা হলো এক ধরনের মানবব্যাধি। প্রশ্ন করাই এই ব্যাধির চিকিৎসা। আল্লাহ তাআলাও পবিত্র কালামুল্লাহকে বিশ্বাসীদের জন্য ‘শিক্ষা’ বলে উল্লেখ করেছেন।

বই: রূহের খোরাক

লেখক:  আল্লামা হাফিয ইবনুল কায়্যিম আল জাওযী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *