ইসলাম কেন?

মানুষের সমগ্র সত্তা একটি নৌকার মতো। আর দুনিয়ার জীবন হলো বিশাল এক সমুদ্র। এক নির্দিষ্ট দূরত্বের পরেই মূল গন্তব্যটি। সমুদ্রের স্রোত সারাক্ষণ গন্তব্যের বিপরীত দিকে প্রবহমান। কোনো ক্ষুদ্র নৌকার পক্ষে নিজ থেকে গন্তব্য পর্যন্ত পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব।
অধিকাংশ মানুষই নিজের জীবনের বাস্তবতা না জেনে, জীবনসমুদ্রের সাথে একলা কুলিয়ে উঠতে না পেরে কিংবা স্বেচ্ছায়….. নিজেকে স্রোতে ভাসিয়ে দেয়। ফলে স্রোত যখন যেদিকে মোড় নেয়, মানুষ নামের নৌকাও জীবনস্রোতের সাথে বয়ে চলে। এই নৌকা বা মানুষ উদ্দেশ্যহীন, গন্তব্যহীন।
কোনো নৌকা নিজ থেকেই সমুদ্র পাড়ি দিতে পারে না। তার জন্য একজন মাঝি এবং বইঠা থাকা জরুরি। আর মানুষের সত্তা শুধু নৌকার অবয়ব, এতে কোনো মাঝি বা বৈঠা থাকে না।
তাই গন্তব্যে পৌঁছতে হলে মানুষ নামের এই নৌকার এমন কোনো দক্ষ মাঝির প্রয়োজন, যার উত্তাল সমুদ্রে টিকে থাকার সাহস আছে, আছে গন্তব্যে পৌঁছার নির্দেশনাম্যাপ। আর প্রয়োজন একটা শক্ত বইঠা, যে সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ের আঘাতেও ভাঙবে না।
এই পৃথিবীতে মানুষের জীবনসমুদ্র পাড়ি দিতে একমাত্র উপযুক্ত এবং সাহসী মাঝি হলো—ইসলাম।
কেননা জগতের সমস্ত বিপরীত শক্তির আপ্রাণ চেষ্টার পরেও কেউ ইসলামের বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে পারেনি। নিশ্চিহ্ন করার হাজারো ষড়যন্ত্রের পরেও সে মহিমার সাথে টিকে আছে। একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীর বুকে খুঁটি গেড়ে যে জীবনদর্শন নিজের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে, তার থেকে সাহসী আর সক্ষম মাঝি কে হতে পারে?
দিক ঠিক রাখার জন্য শক্তপোক্ত একটা বইটাও ইসলামের আছে। তা হলো, পবিত্র ‘আল-কুরআন’—যাকে সংরক্ষণ করেন স্বয়ং স্রষ্টা, তাকে ভেঙে ফেলার সাধ্য কার? যার ম্যাপ নির্ভুল, তাকে পথ থেকে বিচ্যুত করবে কে?
তাই ইসলামকেই তোমার সত্তার মাঝি বানিয়ে নাও, আর কুরআনকেই জীবনের ম্যাপ হিসেবে গ্রহণ করে নাও। অন্য কাউকে যদি এই দায়িত্ব দিতে চাও তবে জেনে রেখো, পৃথিবীর বুকে আর কারও জীবনসমুদ্র পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার যোগ্যতা নেই, বস্তুত সঠিক গন্তব্যটাই জানা নেই ওদের। নিজ সৃষ্টির ব্যাপারে স্রষ্টার চাইতে নির্ভুল আর কে? স্রষ্টার চেয়ে সঠিক নির্দেশনা আর কার জানা?
লেখক: উস্তাদ মোহাম্মদ হোবলোস
লেখক: ডা. শামসুল আরেফীন
Leave a Reply