কাজের মানুষের সাথে আচরণ কেমন হওয়া উচিৎ?

আমার ঘরে হয়ত কাজের মানুষ আছে। তার সাথে আচরণের ব্যাপারে আমি কতটুকু সতর্ক!
তার সাথে জুলুম না করার ব্যাপারে তো আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুশয্যায়ও তাকীদ দিয়ে গেছেন। তার ঘাম শুকানোর পূর্বেই তাকে তার ন্যায্য পাওনা দিয়ে দিতে বলেছেন। তার ভুলত্রুটিগুলো সত্তর বার মাফ করার কথা বলেছেন।
তো আমি কি পালন করছি আমার প্রিয় নবীজীর অসিয়তগুলো। নাকি তার বিপরীত করছি?
আমাকে ভাবতে হবে, সেও আমার মতোই রক্তমাংসে গড়া মানুষ। তার শরীরও আমার শরীরের মতো। হৃদয়টাও আমার হৃদয়ের মতো। সুতরাং আমার শরীর এবং হৃদয়ের সাথে আমি যেমন আচরণ করি, সেগুলোর ব্যাপারে আমি যতটুকু সতর্কতা অবলম্বন করি, তেমন আচরণ ও সতর্কতা তার ক্ষেত্রেও জরুরি।
তার মাঝে আর আমার মাঝে পার্থক্য তো এতটুকুই, আমাকে আল্লাহ সচ্ছল পরিবারে জন্ম দিয়েছেন আর তাকে দিয়েছেন অসচ্ছল পরিবারে। সেই সুবাদে আমি পরিবারের মাঝে থাকতে পারছি। আমার চাহিদামতো সব পাচ্ছি। পড়ালেখা করে শিক্ষিত হতে পারছি। কিন্তু দরিদ্রতার কারণে তাকে আমার বাসায় কাজ করতে হচ্ছে। পড়ালেখার ইচ্ছে থাকলেও পারছে না।
কিন্তু সে আমার বাসার খাদেমা হলেও তাকে আমার মুসলিম বোন মনে করতে হবে। তার সাথে কোমল ও ইনসাফের আচরণ করতে হবে।
তা না করে তার সাথে আমি পাশবিক আচরণ করছি না তো! সাধ্যের বাইরে কাজ দিয়ে তার উপর চাপ সৃষ্টি করছি না তো! ঠিকঠাকভাবে কাজ না করতে পারলে তাকে বকাঝকা, গালমন্দ, শারীরিক নির্যাতন করছি না তো! আমি উৎকৃষ্ট মানের খাবার খেয়ে তাকে বাসি পচা খাবার খেতে দিচ্ছি না তো!
জামা কাপড় কেনার সময় আমার জন্য সুন্দর দামী পোশাক কিনছি আর তার জন্য যাচ্ছেতাই নিম্নমানের পোশাক কিনছি না তো! আমি খাটে শুয়ে তাকে মেঝেতে অথবা রান্না ঘরে গরমের মাঝে শুতে দিচ্ছি না তো! দিনরাত তাকে একের পর এক কাজে ব্যস্ত রেখে তার বিশ্রাম, ঘুম, বিনোদনে বিঘ্ন ঘটাচ্ছি না তো!
সে পড়তে চাইলে বা পড়ার মেধা থাকলে তাকে পড়তে বাধা দিচ্ছি না তো!
এসব থেকে আল্লাহ আমামদেরকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন।
Leave a Reply