নবী জীবনের ঘটনা-৩

নবী জীবনের ঘটনা-৩

একজন ক্ষুধার্ত অসহায় ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে তার অবস্থা জানাল।

তিনি তাঁর স্ত্রীগণের নিকট লোক পাঠিয়ে ঘরে কোনো খাবার আছে কি না জানতে চাইলেন। সকলের কাছ থেকেই সংবাদ এল, ঘরে পানি ছাড়া কিছুই নেই।

এরপর নবীজী সাহাবীদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের মধ্যে কে আজ এই ব্যক্তির মেহমানদারি করাতে প্রস্তুত? আনসারী সাহাবী আবু তালহা রা. দাঁড়িয়ে বললেন, আমি। তিনি তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলেন।

স্ত্রীকে বললেন, সে নবীজীর মেহমান, তার সমাদর করতে হবে। ঘরে কী খাবার আছে বল? স্ত্রী বললেন, বাচ্চাদের জন্য অল্প কিছু খাবার আছে। আর কিছুই নেই। তিনি বললেন, আচ্ছা, তুমি সেটুকুই মেহমানের জন্য প্রস্তুত কর।
আর বাচ্চাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে ফেলো। আর শোনো, মেহমানের সামনে খাবার দেওয়ার পর বাতি ঠিক করার ছুতায় তা নিভিয়ে ফেলবে। স্ত্রী সবকিছু প্রস্তুত করলেন।

মেহমানের সামনে খাবার উপস্থিত করার পর পূর্বের কথা অনুযায়ী বাতি নিভিয়ে দেয়া হল। স্বামী-স্ত্রী উভয়ে অন্ধকারের মধ্যে ভান করলেন যে, তারাও সাথে খাচ্ছেন। এভাবে তারা পুরো পরিবার উপোস থেকে মেহমানকে খুশী করার চেষ্টা করলেন।

সকালে যখন আবু তালহা রা. নবীজীর দরবারে উপস্থিত হলেন, নবীজী তাকে বললেন, গত রাতে মেহমানের সাথে তোমাদের স্বামী-স্ত্রীর আচরণে আল্লাহ পাক খুবই খুশি হয়েছেন।

-সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৭৯৮,৪৮৮৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২০৫৪

এই ঘটনায় আমাদের জন্য অনেক শিক্ষা রয়েছে।

যেমন :
(ক) নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ ব্যক্তিকে প্রথমে নিজেই মেহমানদারি করাতে চেয়েছেন। শুরুতেই তাকে অন্যের কাছে পেশ করেননি।
(খ) এতে নবীজীর মুজাহাদার যিন্দেগীর চিত্রও ফুটে উঠেছে।
(গ) নিজের ঘরের অবস্থা সাহাবী আবু তালহা রা.-এর অজানা থাকার কথা নয়। এরপরও তিনি ক্ষুধার্তকে খাওয়ানোর মত মহা পুণ্যের কাজটি হাতছাড়া করতে চাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *