সালাম : এক অতুলনীয় সামাজিক বিধান

সমাজে চলতে গেলে একজন মুসলিমের সাথে অন্য মুসলিমের সাক্ষাৎ হয়।
তখন একে অন্যের কল্যাণ কামনায় সালাম দিয়ে কথা শুরু করে। সালাম মুসলিমের স্বতন্ত্র সামাজিক শিষ্টাচার।
স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনে কারীমে সালামের আদেশ দিয়েছেন এবং এসংক্রান্ত আদব শিখিয়েছেন। আর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর অগণিত হাদীসে সালামের বিধি-বিধান বর্ণনা করেছেন। যেগুলো জমা করলে স্বতন্ত্র একটি বই হয়ে যাবে।
কারো ঘরে প্রবেশের সময় আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে সালামের দির্দেশ দিয়েছেন-
فَاِذَا دَخَلْتُمْ بُیُوْتًا فَسَلِّمُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِكُمْ تَحِیَّةً مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ مُبٰرَكَةً طَیِّبَةً.
যখন তোমরা ঘরে ঢুকবে নিজেদের লোকদের সালাম করবে- কারণ এটা সাক্ষাতের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে প্রদত্ত বরকতপূর্ণ ও পবিত্র দুআ। -সূরা নূর (২৪) : ৬১
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُیُوْتًا غَیْرَ بُیُوْتِكُمْ حَتّٰی تَسْتَاْنِسُوْا وَ تُسَلِّمُوْا عَلٰۤی اَهْلِهَا .
হে মুমিনগণ! নিজ গৃহ ছাড়া অন্যের গৃহে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না অনুমতি গ্রহণ কর এবং তার বাসিন্দাদের সালাম দাও। -সূরা নূর (২৪) : ২৭
আর সালামের জবাব কীভাবে দিতে হবে তাও শেখানো হয়েছে কুরআনে। সালামের বাক্য থেকে উত্তম বাক্যে, বাড়িয়ে উত্তর দেবে; নাহলে অন্তত সালামদাতার সমান বাক্যে উত্তর দেবে। যে ব্যক্তি সালাম শুনেছে, সালামের জবাব দেয়া তার উপর ওয়াজিব। জবাব দেয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা গ্রহণযোগ্য নয়-
وَ اِذَا حُیِّیْتُمْ بِتَحِیَّةٍ فَحَیُّوْا بِاَحْسَنَ مِنْهَاۤ اَوْ رُدُّوْهَا.
যখন তোমাদেরকে কেউ সালাম দেয়, তখন তোমরা (তাকে) তদপেক্ষা উত্তমরূপে সালাম (জবাব) দিয়ো, কিংবা (অন্ততপক্ষে) সে শব্দেই সালামের জবাব দিয়ো। -সূরা নিসা (৪) : ৮৬
একজন সত্যিকারের মুসলিম কখনো সালাম থেকে গাফেল হতে পারে না।
সালাম দেওয়ার জন্য শরীয়ত নির্ধারিত বাক্য হল-
السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও উপরোক্ত বাক্যে সালাম দিতেন এবং মুসলিমদের এভাবে সালাম দিতে শিখিয়েছেন। এক ব্যক্তি এসে নবীজীকে সালাম দিল (এ বাক্যে)-
عَلَيْكَ السّلَامُ يَا رَسُولَ اللهِ.
তখন নবীজী বললেন-
إِنّ عَلَيْكَ السّلَامُ تَحِيّةُ المَيِّتِ…
عَلَيْكَ السَّلَامُ এটা তো মৃতদের অভিবাদন (একথা তিনি তিনবার বললেন)। এরপর বললেন-
إِذَا لَقِيَ الرَّجُلُ أَخَاهُ المُسْلِمَ فَلْيَقُلْ: السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
যখন কেউ তার মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে তখন যেন বলে-
السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
-জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭২১
সালামের বাক্য স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা নির্বাচন করেছেন। আদম সন্তানদের জন্য এই বাক্যকেই তাহিয়্যাহ তথা অভিবাদন স্বরূপ নির্ধারণ করেছেন। এ বাক্যের ভাব ও ভাষা, শব্দ ও সৌন্দর্য তুলনাহীন।
Leave a Reply