মুমিনের দুনিয়ার জীবন কেমন হওয়া চাই?

মুমিনের দুনিয়ার জীবন কেমন হওয়া চাই?

মুমিনের জীবন কেমন হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন

كُنْ فِي الدّنْيَا كَأَنّكَ غَرِيبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ.

তুমি দুনিয়ায় থাকো ভিনদেশীর মতো, অথবা পথিকজনের মত। সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪১৬

মুসাফির পথ চলছে। কোথাও তার মন বসছে না। কোথাও নিজের জন্য ঘর তৈরি করছে না। কোনো স্টেশনেই সে থামছে না। সে গন্তব্য পানে ছুটে চলছে। চলার পথে সে সবকিছুই দেখছে। প্রতিটা স্টেশনই সে পার হয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু কোথাও তার মন বসছে না। থেকে থেকে তার মনে পড়ছে ফেলে আসা বাড়ির কথা, স্ত্রী-পুত্রের কথা। মাথায় তার একটাই চিন্তা গন্তব্যে পৌঁছতে হবে। সে কাজের জন্য ঘর থেকে বের হয়েছে, কাজ শেষে আবার তাকে ঘরে ফিরতে হবে।

চড়ুই, শালিক, ময়না কত ধরনের পাখি আছে। দিনভর তারা ছুটতে থাকে এদিক সেদিক। খাবারের অন্বেষায়। দিনশেষে সন্ধ্যায় সেই লতাপাতার ঝুপড়িতেই আশ্রয় নেয়।

সারাদিন কত বিরাট বিরাট অট্টালিকায় ছিল! এক ইমারত থেকে আরেক ইমারতে ছুটে বেড়িয়েছে। কত বড় বড় আমিরের চৌহদ্দিতে খাবার কুড়িয়ে এসেছে! কিন্তু সেখানে মন বসেনি। সন্ধ্যা হয়েছে। সেই ছন-বনের ঝুপড়িতেই ফেরত এসেছে। ছানাগুলোর কথা মনে পড়েছে। সাথী-সঙ্গিকে মনে পড়েছে। তাই সন্ধ্যা নামতেই সোজা উড়াল দিয়ে চলে এসেছে নিজের নীড়ে।

মুমিনের অবস্থাও তাই।

দুনিয়াতে সে কর্মব্যস্ত থাকে। প্রয়োজনে সারাদিন ঘুরাফেরা করে। কাজ-কর্ম করে। দোকান-পাট করে। চাকরি-বাকরি করে। আট ঘণ্টা-দশ ঘণ্টা ডিউটি করে। কিন্তু আসল গন্তব্য সে ভুলে বসে না। কবরের অন্ধকার গহ্বরের কথা তার মনে থাকে সেখানে হাজার হাজার বছর শুয়ে থাকতে হবে। সে সেখানে আলো জ্বালবার ফিকির করে। আখেরাতের কথা তার স্মরণ থাকে সেখানে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে।

ব্যস, যখন সন্ধ্যা নেমে এল, জীবন-বাতি নিভে এল সে গন্তব্যের পথ ধরে। দুনিয়াতে থাকতেই সে গুছিয়ে নেয় আখেরাতের পাথেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *