আপনিও কি এমন?

এমন ঘটনা শোনা যায়,
১। কাজের সহযোগী ছোট মেয়েটি সকালে সবার আগে ঘুম থেকে ওঠে। এরপর সে নাস্তা তৈরিতে লেগে যায় তখন ঘরের সবাই বেঘোর ঘুমে। নাস্তা তৈরি হলে ধীরে ধীরে এক-একজন করে আড়মোড়া দিতে দিতে ওঠে। এরপর নাস্তা পরিবেশন হয় একে-একে সবাই নাস্তা খেলেও এখনও ঘরের ছোট মেয়েটি ওঠেনি। তাই তাকে আরো অপেক্ষা করতে হয়। ছোট মেয়েটি উঠে নাস্তা সারলে তারপর নিজের নাস্তা!
অথচ সে সকালে উঠেছে এবং এপর্যন্ত সবার জন্য রুটি বানিয়েছে। কিন্তু সবার শেষ হওয়া পর্যন্ত তার খাওয়া নিষেধ। তাহলে বলুন, কোথায় নবীজীর শিক্ষা আর কোথায় আমাদের আচরণ!
২। বাড়ির ছেলে-মেয়েরা অবসর সময়ে হাসি-কৌতুক, গল্প ও খেলাধুলা করে। এটি একটি শিশুর স্বাভাবিক চাহিদা। কিন্তু শিশু হওয়া স্বত্ত্বেও কাজের মেয়ের জন্য খেলাধুলার কল্পনাও নিষিদ্ধ।
এটি যেন সমাজে অলিখিত আইন। এমনটি হওয়া উচিত নয়। মেয়েটি বাড়িতে ছিল; সেখানে যে কোনো সময় সে যে কারো সাথে খেলাধুলা করতে পারতো। এখন সে আমার বাসার কাজের মেয়ে;
কিন্তু সেও তো আমার সন্তানের মত ছোট শিশু। তারও তো খেলতে মন চায়। সুতরাং আমি তাকে সময় বের করে খেলার সুযোগ করে দিব।
৩। আমি আমার সন্তানসহ কারো বাড়িতে বেড়াতে যাই। সাথে কাজের মেয়েকেও নিই। জানা কথা, বেড়ানো ছোট-বড় সবার জন্যই আনন্দের।
সেখানে গিয়ে সবাই অন্যদের মেহমান। কিন্তু কাজের মেয়ের মেহমান হওয়ার অধিকারই নেই। সেখানেও সে কাজের মেয়ে। অর্থাৎ যাদের কাজের মেয়ে তাদের তো কাজের মেয়েই, এমনকি যাদের বাড়িতে মেহমান হয়েছে তারাও তাকে কাজের মেয়ে মনে করে।
ফলে কাজের মেয়ের মতই তাকে দিয়ে কাজ করায়। খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রেও তার সাথে মেহমান নয়; বরং কাজের মেয়ের মতই আচরণ করে। খাবারও পায় সে সবার পরে। এসব ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করা চাই।
কাজের মানুষ তো স্বাধীন; একজন কৃতদাসকেও যদি প্রহার করা হয় তার শাস্তিও ভয়াবহ। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
لَا يَضْرِبُ أَحَدٌ عَبْدًا لَهُ – وَهُوَ ظَالِمٌ لَهُ – إِلّا أُقِيدَ مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
যদি কেউ তার দাস-দাসীকে অন্যায়ভাবে প্রহার করে কিয়ামত দিবসে তাকেও এভাবে প্রহার করে তার থেকে কেসাস বা বদলা নেয়া হবে। -আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ১৮১
Leave a Reply