তাকওয়া কি? কাকে বলে?

اِنَّهٗ مَنْ یَّتَّقِ وَ یَصْبِرْ فَاِنَّ اللهَ لَا یُضِیْعُ اَجْرَ الْمُحْسِنِیْنَ.
যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে এবং সবর করবে আল্লাহ তাআলা তার সওয়াব ও প্রতিদান কখনো নষ্ট করবেন না। কারণ, যার মধ্যে তাকওয়া আর সবর আছে সে ভালো মানুষ। তাই আল্লাহ তাআলা তাকে দুনিয়াতেও প্রতিদান দেবেন আখেরাতেও প্রতিদান দেবেন। কাজেই আমাদের মধ্যে শোকরের সাথে তাকওয়া এবং সবরও থাকতে হবে ।
কাকে বলে তাকওয়া? আল্লাহকে ভয় করা। আল্লাহকে ভয় করার অর্থ কি ভয় করে ঘরে বসে থাকা, না কাজ করা? এত ভয় পাচ্ছে যে, এখন নড়তেই পারছে না, একে কি তাকওয়া বলে? তাকওয়ার অর্থ হল, আল্লাহর সামনে যে আমাকে হাজিরা দিতে হবে, দাঁড়াতে হবে, তখন কীভাবে তাকে মুখ দেখাব- সেটা চিন্তা করে তিনি যা ফরয করেছেন তা করা, যা হারাম করেছেন তা থেকে বেঁচে থাকা।
তাকওয়া কাকে বলে, তার অনেক ব্যাখ্যা আছে। সূরা ক্ব-ফের একটি আয়াত লক্ষ করুন-
وَاُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِیْنَ غَیْرَ بَعِیْدٍ، هٰذَا مَا تُوْعَدُوْنَ لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ، مَنْ خَشِیَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَیْبِ وَجَآءَ بِقَلْبٍ مُّنِیْبِ، ادْخُلُوْهَا بِسَلٰمٍ ذٰلِكَ یَوْمُ الْخُلُوْدِ، لَهُمْ مَّا یَشَآءُوْنَ فِیْهَا وَ لَدَیْنَا مَزِیْدٌ.
وَاُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِیْنَ غَیْرَ بَعِیْدٍ.
হাশরের মাঠে একপর্যায়ে জান্নাত কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে মুত্তাকীদেরকে দেখাবার জন্য। অর্থাৎ এতদিন তো কেবল জান্নাতের কথা শুনেছ, এখন দেখ!
هٰذَا مَا تُوْعَدُوْنَ لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ.
দুনিয়াতে কেবল তোমাদেরকে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হত এই বলে যে, হারাম ও গোনাহ পাপাচার ছাড়লে জান্নাত পাবে। নেক কাজ করলে জান্নাত পাবে। এখন স্বচক্ষে দেখ।
لِكُلِّ اَوَّابٍ حَفِیْظٍ.
জান্নাত দেখানো হবে ওই ব্যক্তিকে, যে গোনাহ থেকে বেঁচে ছিল। ভুলে কখনো গোনাহ হয়ে গেলে তওবা করত। এক গোনাহের জন্য দশ বার তওবা করত। শত বার আল্লাহর দরবারে কাঁদত।
শয়তানের ওয়াসওয়াসায়, নফসের ধোঁকায় কখনো গোনাহ হয়ে গেলে বসে থাকে না। গোনাহ করতেই থাকে, এমন না; বরং ভুল হয়ে গেলে সাথে সাথেই তওবা করে। বারবার করে। একে বলে ‘আওয়াব’।
مَنْ خَشِیَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَیْبِ.
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে না দেখেও ভয় করে। দয়াময় আল্লাহ কত নিআমত আমাকে দান করেছেন, তারপরও কি আমি তাঁর নাফরমানী করব? আল্লাহর রহমত ও নিআমতের কথা স্মরণ করে গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে।
وَجَآءَ بِقَلْبٍ مُّنِیْبِ.
আল্লাহর দরবারে হাজির হয় এমন দিল নিয়ে যে দিল আল্লাহমুখী। যে দিলের মধ্যে দুনিয়াবী লোভ এবং শয়তানী ফিকির নেই। কোনো মুনাফেকী ও শিরক নেই। কোনো অন্যায় বাসনা ও পাপাচার নেই। আল্লাহমুখী পরিষ্কার দিল নিয়ে সে আল্লাহর দরবারে হাজির হয়। দুনিয়াতেও নামায-দুআ ইত্যাদির মাধ্যমে সে আল্লাহর দরবারে হাজির হয়। আখেরাতেও যখন হাজির হবে, তখনও তার দিল থাকবে সাফ ও পরিষ্কার। যেখানে কোনো মুনাফেকী, কোনো পাপাচার নেই; বরং তার দিলটা আল্লাহর মহব্বতে পরিপূর্ণ।
Leave a Reply