দুআয়ে মাসূরার অর্থ

নামাযের শেষে আমরা যে দুআয়ে মাসূরা পড়ি, তার কী অর্থ?
اللّٰهُمّ
হে আল্লাহ!
اِنّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا.
আমি তো নিজের প্রতি অনেক জুলুম-অবিচার করে ফেলেছি।
কত গোনাহ, কত পাপ করেছি! কারণ একটা ফরয লঙ্ঘন করা এক জুলুম নয়, অনেকগুলো জুলুম। একটা গোনাহে জড়িত হওয়া একটা জুলুম নয়, অনেক জুলুম।
وَلاَ يَغْفِرُ الذّنُوبَ إِلّا أَنْتَ.
ক্ষমা একমাত্র আপনিই করতে পারেন। আপনি ছাড়া আর কেউ ক্ষমা করতে পারে না।
নাফরমানী করা হয়েছে আপনার, ক্ষমাও একমাত্র আপনিই করতে পারেন। আপনি ছাড়া আর কেউ পারে না ক্ষমা করতে। তাছাড়া আপনিই যেহেতু একমাত্র মাবুদ ও মালিক, তাই আপনিই পারেন ক্ষমা করতে। আর কেউ পারে না।
فَاغْفِرْ لِي.
আল্লাহ! কাজেই আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ.
আপনার কাছে যে ক্ষমা চাচ্ছি, এটা আমার প্রাপ্য বা অধিকার নয়, এটা আপনার পক্ষ থেকে দয়া ও মেহেরবানী। কারণ আমি তো পাপ করে আপনার আরো দূরে সরে গিয়েছি। তাই আপনার কাছে আমার কোনো পাওনা বা দাবি-দাওয়া নেই; বরং আপনার দয়া আর মেহেরবানীতে আপনার পক্ষ থেকে আপনি আমাকে মাগফিরাত দান করুন। আপনার দানের ভা-ার থেকে আমাকে দান করুন মাওলা!
তাহলে দেখুন, কেমন মর্মস্পর্শী দুআ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিখিয়েছেন!
আল্লাহর কাছে এভাবে বলো, এভাবে কাঁদো! নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিয়েছ, এতক্ষণ আল্লাহর বিশেষ দরবারে ছিলে। এখন দরবারের আলাপ-সালাপ, কথাবার্তা শেষ। তোমার হাজিরা যদি কবুল হয়ে থাকে, তাহলে এখন হাজিরা শেষে আল্লাহর কাছে কী চাইবে, চাও! কেমন যেন আল্লাহ বলছেন, আমার দরবারে তো এসেছ, আচ্ছা, এখন যা চাওয়ার চেয়ে নাও! ফলে ওই সময় কত সুন্দর করে আল্লাহর কাছে আমরা চাইতে পারি- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটা আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। কত সুন্দর দুআ আমাদের শিখিয়েছেন!
فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ.
আল্লাহ! ক্ষমা আপনার দান, আপনি মেহরবানী করে ক্ষমা করে দিন!
وَارْحَمْنِي.
কেবল মাগফিরাত নয়, আমার প্রতি আপনি রহমতও বর্ষণ করুন। আমার প্রতি দয়া করুন।
إِنّكَ أَنْتَ الغَفُورُ الرّحِيمُ.
আপনি গফুর! আপনার ‘গফুর’ নামের বরকতে আমাকে মাগফিরাত দান করুন। আপনি রহীম! আপনার ‘রহীম’ নামের বরকতে আপনি আমার প্রতি রহমত বর্ষণ করুন।
এসব বলার পর এবার বলুন- ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ!’
এটা হল এক ধরনের নামায। আর যদি এমন হয় যে, নামায শুরু করলাম, শেষ করলাম, কোন্ দিকে মন, কোথায় আমার খেয়াল, সেটার কোনো গুরুত্ব নেই তাহলে কেমন হবে?
Leave a Reply