তওবা করার অর্থ কী

তওবা করার অর্থ কী

তওবা অর্থ ফিরে আসা। কোন্ দিকে ফিরে আসবেন?

আপনি তো নিজ জায়গায়ই আছেন, আবার ফিরে আসবেন কীভাবে? অর্থাৎ এই যে গোনাহ করা হল, গোনাহ করা মানেই হল আল্লাহর দিক থেকে সরে যাওয়া। আল্লাহমুখী আর থাকা হল না। তাই তওবা করা ফরয। তওবা করে আবার আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে হবে।

أستغفرُ اللهَ الذي لا إلهَ إلّا هُوَ الحيُّ القيُّومُ وأتوبُ إليه.

أستغفرُ اللهَ.

আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।

الذي لا إلهَ إلّا هُوَ.

যিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নাই। সত্য মাবুদ একমাত্র আল্লাহ।

কাজেই আমার যবান, দিল ও দেহ সবকিছু একমাত্র আল্লাহমুখী হয়ে যাওয়া উচিত। আমি যদি গোনাহ করে ফেলি, আল্লাহর নাফরমানী করে ফেলি, তাহলে তো আমি উল্টো পথ ধরলাম। জাহান্নামের পথে হাঁটা ধরলাম। আমার বাড়ি তো জান্নাত। কেন আমি জাহান্নামের পথে হাঁটছি? পাপ করা মানেই আমি উল্টো দিকে ফিরলাম। পাপ করা মানেই আমি জাহান্নামের রাস্তার দিকে হাঁটা ধরলাম। এজন্য তওবা করা ফরয।

মনে রাখবেন, কোনো পাপকে দীর্ঘ করা যায় না। ভুল মানুষের হয়, কিন্তু ভুলের ওপর বসে থাকা যায় না। ভুলে গোনাহ হয়ে যায়, কিন্তু মুমিন গোনাহ করতে থাকে না, তওবা করে। তওবা করা ফরয। তাই মুমিন গোনাহ করে বসে থাকে না।

أستغفرُ اللهَ الذي لا إلهَ إلّا هُوَ الحيُّ القيُّومُ وأتوبُ إليه.

আমি ক্ষমা চাচ্ছি আল্লাহর কাছে, তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই…

আমি কোন্ দিকে হাঁটছি? কোথায় যাচ্ছি আমি?

وأتوبُ إليه.

আল্লাহ! আমি ফিরে আসছি। আপনি আমাকে গ্রহণ করুন। আমাকে দয়া করে আপনার রহমতের কোলে টেনে নিন! আমি অন্য দিকে ফিরব না। অন্য দিকে যাব না।

আরেকটি দুআ-

اللّٰهُمّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلٰهَ إِلّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيّ، وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي، فَإِنّهُ لاَ يَغْفِرُ الذّنُوبَ إِلّا أَنْتَ.

আপনি যে দুআ পাারেন, যেই ভাষায় পারেন, আল্লাহর কাছে বলতে থাকুন। ইসতেগফারের কালিমা, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার কালিমার অভাব নেই। আপনি যেটা পারেন, যেই ভাষায় পারেন চাইতে থাকুন। সকল ভাষাই তো আল্লাহর সৃষ্টি। কাজেই আরবীতে না পারলে নিজের ভাষায় আল্লাহকে বলুন। আল্লাহর কাছে চাইতে থাকুন। আল্লাহ, আমার ভুল হয়ে গেছে, আপনি ক্ষমা করে দিন! আমি বাঁচতে চাই, আপনি আমাকে রক্ষা করুন! আমি শয়তান ও নফসের ধোঁকায় বা লোভে পড়ে যত পাপের পথে পা বাড়াব, আপনি আপনার রহমত দিয়ে আমাকে টেনে ধরে রাখবেন, যাতে আমি পাপের পথে না যেতে পারি!

এভাবে যদি আমি দিল থেকে বারবার বলি, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই শুনবেন। এরপর যদি আমি পাপের পথে ধাবিত হই, সাথে সাথে আমার স্মরণ হবে- আরে, আমি আল্লাহর কাছে এত বার ক্ষমা চাইলাম, এখন কী করে আবার পাপে লিপ্ত হই! এভাবে যখন স্মরণ হতে থাকবে, আল্লাহ বাঁচার তাওফীক দেবেন ইনশাআল্লাহ। এর নামই হল তাকওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *