তাঁদের নামায ও আমাদের নামায

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলা দুজন সাহাবীকে পাহারার দায়িত্ব দিলেন।
তাঁদের একজন ছিলেন মুহাজির অপরজন আনসারী।
দুজনে সিদ্ধান্ত নিলেন, আমাদের একজন রাতের দ্বিপ্রহর পর্যন্ত পাহারা দিবে অপরজন বিশ্রাম নিবে। অতঃপর দ্বিতীয় জন উঠে পাহারা দিবে আর প্রথম জন বিশ্রাম নিবে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতের প্রথমভাগে আনসারী সাহাবী পাহারা দেওয়া শুরু করলেন এবং মুহাজির সাহাবী শুয়ে পড়লেন।
আনসারী সাহাবী ভাবলেন শুধু বসে না থেকে বরং নামায পড়ি।
নামায শুরু করার পর শত্রুশিবির থেকে এক কাফের এসে তাঁকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে তীর ছুড়ল। তিনি অবিচল দাড়িয়ে থাকলেন। ঐ দুশমন মনে করল তীর হয়তো ঠিকমতো লাগেনি। তাই সে আবার তীর ছুড়ল। এদিকে ঐ সাহাবী একভাবেই দাড়িয়ে রইলেন। ওদিকে ঐ দুশমনও একের পর এক তীর ছুড়তে লাগল। আর তা সাহাবীকে বিদ্ধ করতে থাকল।
সাহাবী ধীরস্থিরভাবে রুকু-সেজদা আদায় করে যথারীতি নামায শেষ করলেন এবং মুহাজির সাথীকে জাগ্রত করলেন। মুহাজির সাহাবী তাঁর শরীর থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে দেখে ব্যাকুল হয়ে গেলেন এবং ঘটনা শুনে বললেন, তুমি আমাকে আরো আগে কেন জাগ্রত করনি?
আনসারী উত্তর দিলেন, আমি সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করছিলাম, শেষ না করে রুকুতে যেতে ইচ্ছে হল না। কিন্তু পরে আশঙ্কা হল আমার গায়ে যেভাবে তীর বিদ্ধ হচ্ছে তাতে যেকোনো অবস্থায় আমি শহীদ হয়ে যেতে পারি। আর তোমাকে জাগানোর আগেই যদি আমি শহীদ হয়ে যাই তাহলে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে উদ্দেশ্যে পাহারা দিতে বলেছিলেন তা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
তাই তাড়াতাড়ি নামায শেষ করে ফেলেছি। যদি এ আশংকা না হত তাহলে সূরা শেষ না করে আমি রুকুতে যেতাম না। যদিও আমার জীবন-প্রদীপ নিভে যাক না কেন?
Leave a Reply