অপ্রাপ্তির আক্ষেপও নয় প্রাপ্তির উল্লাসও নয়।

মানবচরিত্রের একটি নেতিবাচক দিক হল প্রান্তিকতা।
আকাঙ্ক্ষা পূরণে উল্লাস আর আশাভঙ্গে অতিরিক্ত বেদনাবোধ মানুষের স্বভাবজাত দুর্বলতা। পছন্দের কিছু ঘটলে মানুষ আনন্দের সীমা অতিক্রম করে উল্লসিত হয়ে ওঠে।
কখনো তা গর্ব ও অহংকারেও পর্যবসিত হয়। পক্ষান্তরে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় মানুষ অতিরিক্ত দুঃখবোধের শিকার হয়। এই উভয় প্রান্তিক প্রবণতা দূর করে ভারসাম্যের পথ অবলম্বন করার শিক্ষা দেয় কুরআন কারীম। আল্লাহ তাআলা বলেন-
مَاۤ اَصَابَ مِنْ مُّصِیْبَةٍ فِی الْاَرْضِ وَ لَا فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ اِلَّا فِیْ كِتٰبٍ مِّنْ قَبْلِ اَنْ نَّبْرَاَهَا اِنَّ ذٰلِكَ عَلَی اللهِ یَسِیْرٌ، لِّكَیْلَا تَاْسَوْا عَلٰی مَا فَاتَكُمْ وَ لَا تَفْرَحُوْا بِمَاۤ اٰتٰىكُمْ وَ اللهُ لَا یُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُوْرِ.
পৃথিবীতে এবং তোমাদের প্রাণের উপর যে মসিবতই আসে, তা একটি কিতাবে (লওহে মাহফুযে) লিপিবদ্ধ আছে, আমি তা সৃষ্টির বহু পূর্বেই। এটি আল্লাহর পক্ষে অতি সহজ। (তোমাদের এ বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হল) যেন তোমরা যা হারাও বা না পাও তার জন্য মুষড়ে না পড়ো। এবং যা আল্লাহ তোমাদের দান করেন তার জন্য উল্লসিত না হও। আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। -সূরা হাদীদ (৫৭) : ২৩-২৪
এ আয়াত বলছে, পৃথিবীতে এবং মানুষের জীবনে ভালো-মন্দ যা কিছু ঘটে সবকিছু লওহে মাহফুযে লিখিত তাকদীর অনুযায়ীই ঘটে। কাজেই কোনো অপ্রীতিকর ঘটনায় অতিরিক্ত দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই।
অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় মানবীয় দুর্বলতাবশত মনে তো কিছুটা কষ্ট জন্মেই থাকে। কিন্তু সেই কষ্টকে জিইয়ে রাখা কিংবা অতিরিক্ত দুঃখবোধের শিকার হওয়া উচিত নয়।
বরং সবকিছুই আল্লাহর ফায়সালায় হয় এ বিশ্বাস মনে জাগরূক রেখে ধৈর্য ধারণ করা কর্তব্য। তদ্রূপ কোনো কিছুর অর্জনে স্বাভাবিক আনন্দবোধ মানুষের স্বভাবজাত। এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু স্বাভাবিক আনন্দের স্তর পেরিয়ে উল্লসিত হওয়া এবং অর্জিত বিষয়কে কেবলই নিজের প্রচেষ্টার ফল মনে করার অবকাশ নেই। বরং অর্জিত বিষয় আল্লাহর দান ভেবে শোকর করা কর্তব্য।
এটিই ভারসাম্যপূর্ণ পথ।
Leave a Reply