শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনার দ্বারা গোনাহ মাফ হয়

শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনার দ্বারা গোনাহ মাফ হয়

গোনাহ তো হয়েই যায়। কিন্তু মুমিনের বৈশিষ্ট্য হল, গোনাহ হওয়ার সাথে সাথে সে পেরেশান হয়; কীভাবে সে গোনাহ থেকে মুক্ত হতে পারে, কীভাবে ক্ষমা পেতে পারে! কুরআনে মুমিনের এ গুণ-বৈশিষ্ট্য আলোচিত হয়েছে এ ভাষায়-

وَ الَّذِیْنَ اِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً اَوْ ظَلَمُوْۤا اَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوْبِهِمْ ۪ وَ مَنْ یَّغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اللهُ وَ لَمْ یُصِرُّوْا عَلٰی مَا فَعَلُوْا وَ هُمْ یَعْلَمُوْنَ.

এবং যারা কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া কে পাপ ক্ষমা করবে? আর তারা যা করে ফেলে জেনে বুঝে তাতে অটল থাকে না। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৩৫

হাঁ, মুমিন পেরেশান হয় এবং চিন্তা করতে থাকে- কীভাবে কখন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন! রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের জানিয়েছেন- কোন্ সময় ক্ষমা চাইলে ক্ষমা লাভের আশা করা যায়। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

يَنْزِلُ رَبّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلّ لَيْلَةٍ إِلَى السّمَاءِ الدّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللّيْلِ الآخِرُ يَقُولُ: مَنْ يَدْعُونِي، فَأَسْتَجِيبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ.

আমাদের রব প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আছো, দুআ করবে আমি তার দুআ কবুল করব। কে আছো, আমার কাছে (তার প্রয়োজন) চাইবে আমি তাকে দান করব। কে আছো, আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৪৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৫৮

শেষ রাতে ইসতিগফার আল্লাহর খাছ বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। কুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা শেষ রাতে ইসতিগফারকারীদের প্রশংসা করেছেন। জান্নাতীদের গুণ বর্ণনায় আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَ الْمُسْتَغْفِرِیْنَ بِالْاَسْحَارِ

…এবং রাতের শেষ প্রহরে ক্ষমাপ্রার্থীগণ। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৭

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. দুআ-ইসতিগফারের জন্য শেষ রাতের এনতেযারে থাকতেন। ইবনে কাসীর রাহ. উপরোক্ত আয়াতের অধীনে উল্লেখ করেন- ইবনে ওমর রা. রাতে নামাযে মশগুল থাকতেন। একপর্যায়ে নাফে রাহ.-কে জিজ্ঞেস করতেন, সাহার (শেষ রাত) কি ঘনিয়ে এসেছে? যখন নাফে বলতেন, হাঁ তখন ইবনে ওমর রা. দুআ-ইসতিগফারে মশগুল হতেন।

ইবনে মাসউদ রা. শেষ রাতে দুআ-ইসতিগফারে মশগুল হতেন এবং বলতেন-

وَهَذَا سَحَرٌ، فَاغْفِرْ لِي.

(হে আল্লাহ!) এখন ‘সাহার’ (প্রতিশ্রুত শেষ রাত) সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। (তাফসীরে ইবনে আবি হাতেম, বর্ণনা ১১৯৮২, সূরা ইউসুফ আয়াত ৯৮-এর অধীনে) -তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা আলে ইমরান আয়াত ১৭-এর অধীনে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *