তওবা : সব গোনাহ মুছে দেয়

তওবা : সব গোনাহ মুছে দেয়

শয়তানের সারাদিনের চেষ্টা বরং দীর্ঘদিনের চেষ্টা মুহূর্তে ব্যর্থ করে দিতে পারে মুমিন বান্দা। মুমিনকে আল্লাহ তাআলা এমন হাতিয়ার দান করেছেন। কী সেই হাতিয়ার, যা ব্যর্থ করে দিতে পারে শয়তানের সকল চক্রান্ত?

তাওবা। তাওবার মাধ্যমে মহাপাপীও হয়ে যেতে পারে গোনাহমুক্ত; শয়তানের সকল অপচেষ্টা মুহূর্তে ধূলিস্মাৎ করে দিতে পারে। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

التّائِبُ مِنَ الذّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ.

গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহমুক্ত ব্যক্তির মত। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৪২৫০

মুমিন তো গোনাহ নিয়ে বসে থাকতে পারে না। গোনাহ তো মুমিনের কাছে পাহাড়সম বোঝা। তাই মুমিন গোনাহ হওয়ার সাথে তওবা করে নেয়। কুরআনে কারীম আল্লাহ তাআলা মুমিনের এ গুণের কথা বর্ণনা করেছেন এভাবে-

وَ الَّذِیْنَ اِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً اَوْ ظَلَمُوْۤا اَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوْبِهِمْ وَ مَنْ یَّغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اللهُ، وَ لَمْ یُصِرُّوْا عَلٰی مَا فَعَلُوْا وَ هُمْ یَعْلَمُوْنَ.

এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনো কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনোভাবে) নিজেদের প্রতি যুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গোনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া কেই বা আছে, যে গোনাহ ক্ষমা করতে পারে? আর তারা জেনেশুনে তাদের কৃতকর্মে অবিচল থাকে না। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৩৫

আর আল্লাহ তাআলাও বান্দার তওবা কবুলের জন্য তাঁর ক্ষমার হাত প্রসারিত করেই রাখেন; দিনে-রাতে, সর্বদা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

إِنّ اللهَ عَزّ وَجَلّ يَبْسُطُ يَدَهُ بِاللّيْلِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ النّهَارِ، وَيَبْسُطُ يَدَهُ بِالنّهَارِ لِيَتُوبَ مُسِيءُ اللّيْلِ، حَتّى تَطْلُعَ الشّمْسُ مِنْ مَغْرِبِهَا.

আল্লাহ তাআলা রাতে তাঁর (ক্ষমার) হাত প্রসারিত করেন, যাতে দিনে যারা পাপ করেছে তারা তওবা করতে পারে। আর দিনে তাঁর (ক্ষমার) হাত প্রসারিত করেন, যাতে রাতে যারা পাপ করেছে তারা তওবা করতে পারে। এভাবে (তাঁর অবারিত ক্ষমা) চলতে থাকবে সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হওয়া পর্যন্ত। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭৫৯

তো যত বড় গোনাহই হোক না কেন, তওবার মাধ্যমে সব গোনাহ মুছে যায়। বিভিন্ন নেক আমলের দ্বারা তো সগীরা গুনাহগুলো মিটে যায় কিন্তু তওবা- সগীরা-কবীরা সব গোনাহ মিটিয়ে দেয়।

এখানে স্মরণ রাখতে হবে এবং সচেতন থাকতে হবে- বান্দার হকের ব্যাপারে। তা থেকে মুক্ত হতে হলে, বান্দার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে হবে বা তার থেকে মাফ নিয়ে নিতে হবে তারপর আল্লাহ মাফ করবেন, তার আগে নয়। সুতরাং বান্দার হকের ব্যাপারে সাবধান! শত সাবধান!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *