একটি মহান আমল

কুরআন মাজীদের কিছু সূরা ও আয়াতের প্রাসঙ্গিক ফায়েদাও বর্ণিত হয়েছে হাদীসে। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়াত হল ‘আয়াতুল কুরসী’। এই আয়াতের ফায়েদা বর্ণিত হয়েছে আবু হুরায়রা রা.-এর ঘটনায়। ঘটনাটি সহীহ বুখারীসহ হাদীসের অন্য অনেক কিতাবে এসেছে। সহীহ বুখারীতে এসেছে কয়েকবার। বিস্তারিতভাবে এবং সংক্ষেপে। আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমাকে রমযানে উসূলকৃত যাকাতের সম্পদ হেফাযতের দায়িত্ব দিলেন। এক রাতে এক আগন্তুক খাদ্যের স্তূপ থেকে দু হাত ভরে নিয়ে যেতে লাগল। আমি তাকে ধরে ফেললাম। বললাম, অবশ্যই আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিয়ে যাব।… আবু হুরায়রা রা. পুরো ঘটনা বর্ণনা শেষে বলেন, তখন আগন্তুক আমাকে বলল-
إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَاقْرَأْ آيَةَ الْكُرْسِيِّ لَنْ يَزَالَ مَعَكَ مِنْ اللهِ حَافِظٌ وَلَا يَقْرَبُكَ شَيْطَانٌ حَتّى تُصْبِحَ.
আপনি রাতে যখন ঘুমাতে যাবেন আয়াতুল কুরসী পড়বেন। তাহলে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে একজন হেফাযতকারী ফেরেশতা সকাল পর্যন্ত আপনার সঙ্গে থাকবে। ফলে শয়তান আপনার কাছেও ভিড়তে পারবে না। ঘটনা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
صَدَقَكَ وَهُوَ كَذُوبٌ، ذَاكَ شَيْطَانٌ.
সে ছিল (ইবলিস) শয়তান। সে মিথ্যুক হলেও কথা সত্য বলেছে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১০
আরেকটি বর্ণনায় উবাই ইবনে কা‘ব রা.-এর ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা পাওয়া যায়। তাঁর খেজুরের স্তূপ ছিল। তিনি দেখতে পেলেন সেখান থেকে খেজুর কেবলই কমছে। এক রাতে পাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। দেখলেন, কিছুটা সাবালক ছেলের মতো একটা প্রাণী। তিনি তাকে সালাম দিলেন। সে উত্তর দিল।
জিজ্ঞেস করলেন, তুমি জীন না ইনসান? বলল, জীন। …একপর্যায়ে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?
সে বলল, তুমি সূরা বাকারার আয়াতুল কুরসী পড়তে জানো?
বললেন, হাঁ।
সে বলল-
إِذَا قَرَأْتَهَا غُدْوَةً أُجِرْتَ مِنّا حَتّى تُمْسِيَ، وَإِذَا قَرَأْتَهَا حِينَ تُمْسِي أُجِرْتَ مِنّا حَتّى تُصْبِحَ.
এই আয়াত তুমি সকালে পড়লে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের থেকে রক্ষা পাবে। সন্ধ্যায় পড়লে সকাল পর্যন্ত রক্ষা পাবে।
উবাই রা. বলেন, সকালে আমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে ঘটনাটি শোনালাম। তিনি বললেন-
صَدَقَ الْخَبِيثُ.
খবীসটি সত্য বলেছে। -নাসায়ী, সুনানে কুবরা, হাদীস ১০৭৩০; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৭৮৪; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২০৬৪।
Leave a Reply