আল্লাহ তাআলার এই বাণীর তুলনায় আমার এই পংক্তিগুলোর কী মান হতে পারে?

বিখ্যাত আরবী অভিধানবিদ ইমাম আসমায়ী রাহ. এক বেদুঈন মেয়ের মুখে কয়েকটি পংক্তি শুনে খুব মুগ্ধ হন। তিনি তার প্রতিভায় বিস্ময় প্রকাশ করলে মেয়েটি বলে ওঠে- আক্ষেপ আপনার প্রতি। আল্লাহ তাআলার এই বাণীর তুলনায় আমার এই পংক্তিগুলোর কী মান হতে পারে? একথা বলে মেয়েটি তিলাওয়াত করল-
وَ اَوْحَیْنَاۤ اِلٰۤی اُمِّ مُوْسٰۤی اَنْ اَرْضِعِیْهِ فَاِذَا خِفْتِ عَلَیْهِ فَاَلْقِیْهِ فِی الْیَمِّ وَ لَا تَخَافِیْ وَ لَا تَحْزَنِیْ اِنَّا رَآدُّوْهُ اِلَیْكِ وَ جَاعِلُوْهُ مِنَ الْمُرْسَلِیْنَ.
আর আমি মূসার মায়ের অন্তরে একথা ঢেলে দিলাম যে, তুমি ওকে স্তন্য দান কর। যখন তার (প্রাণের) আশঙ্কা করবে তখন তাকে নদীতে ফেলে দেবে। ভয় করো না, দুঃখও করো না। আমি অবশ্যই তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তাকে রাসূলদের একজন বানাব। -সূরা কাসাস (২৮) : ০৭
আয়াতটি তিলাওয়াত করে মেয়েটি বলল, দেখুন, সংক্ষিপ্ত একটি আয়াত, (কত সহজ-সরল কথা) কিন্তু এতে দুটি আদেশ, দুটি নিষেধ, দুটি সংবাদ ও দুটি প্রতিশ্রম্নতি আছে!
ইমাম আসমায়ী রাহ. বলেন, আমি মেয়েটির কবিতা শুনে যতটা না বিস্মিত হয়েছিলাম তার উপলব্ধির পরিচয় পেয়ে তার চেয়ে বেশি বিস্মিত হলাম। -তাফসীরে কুরতুবী ১৩/২৫২
দেখুন, সহজ-সরল একটি কথার মধ্যেও কী অদ্ভুত সামঞ্জস্য :
আদেশ দুটি হচ্ছে : ‘ওকে স্তন্য দান কর’; এবং ‘…তখন তাকে নদীতে ফেলে দেবে’।
নিষেধ দুটি হচ্ছে : ‘ভয় করো না’, ‘দুঃখও করো না’।
সংবাদ দুটি হচ্ছে : ‘ঢেলে দিলাম’, ও ‘আশঙ্কা করবে’।
আর প্রতিশ্রম্নতি দুটি হচ্ছে : ‘ওকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দিব’ ও ‘তাকে রাসূলদের একজন বানাব’।
এই অদ্ভুত সামঞ্জস্যপূর্ণ শব্দ-বাক্যের কাঠামো ও মাধুর্যপূর্ণ ভাষার মধ্যেই দেয়া হয়েছে কিয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মানবতার জন্য সর্বশেষ ও চূড়ান্ত জীবন-ব্যবস্থা।
সেই জীবন-ব্যবস্থাও এত সহজ-স্বাভাবিকভাবে মানুষের জীবনে পরিবর্তন এনেছে যে, অসংখ্য মানুষ নিজেও টের পায়নি, কীভাবে কুরআন মাজীদের স্পর্শে কোন্ কোন্ মরণব্যাধি থেকে সে আরোগ্য লাভ করেছে।
Leave a Reply